1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় বাড়ছে ঘাটতি

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ জুন, ২০২০
  • ৫৪০ বার

করোনাভাইরাসের কারণে রাজস্ব আদায়ে নেমেছে স্থবিরতা। শিল্প-কারখানা উৎপাদন বন্ধ, আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়া ও ব্যবসায়ীদের আয় কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কমেছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি থাকবে। করোনা দুর্যোগকালে এই বিশাল ঘাটতির মধ্যে আগামী অর্থবছরের বাজেটে বাড়ানো হচ্ছে রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর বিদায় নিচ্ছে। আগামী জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে। ১১ জুন বাজেট ঘোষণা করা হবে। আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার হচ্ছে সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকার বেশি। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে পৌনে চার লাখ কোটি টাকার বেশি। যাতে এনবিআরের ঘাড়ে চাপবে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। অবশিষ্ট অর্থ আসবে এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব খাতে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় বাড়বে ঘাটতির পরিমাণ, যা বৈদেশিক অনুদান কিংবা অন্যান্য উৎস থেকে মেটাবে সরকার।

সম্প্রতি করোনায় রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি তুলে ধরে এনবিআর অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা পূরণ সম্ভব হবে না। আগামী অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা অর্জনও দুরূহ হবে। বাড়তি লক্ষ্যমাত্রায় রাজস্ব আহরণকারী কর্মকর্তাদের ওপর চাপ তৈরি করবে। অনেকে রাজস্ব আদায়ে হাল ছেড়ে দেয় আবার কোনো ক্ষেত্রে করদাতাদের ওপর হয়রানির অভিযোগ আসে।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাঁচ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা, যা ২০০৫-০৬ অর্থবছরের চেয়ে আকার আট গুণ বেশি। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এই বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় তিন লাখ ৭৭ হাজার। আর ঘাটতি ধরা হয়েছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা বৈদেশিক উৎস ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে জোগান আসার কথা।

বাজেট হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ রাজস্ব আহরণে এনবিআরের ঘাড়ে চাপে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এনবিআরবহির্ভূত কর আদায় ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। বৈদেশিক উৎস থেকে অনুদানসহ আয় ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উেসর ব্যাংক থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা।

তবে এনবিআরের রাজস্ব আদায় পরবর্তীতে রিভাইজ করে তিন লাখ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বড় ধাক্কার কারণে সেই রাজস্ব আদায়ও সম্ভব হচ্ছে না। এই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে দুই লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসতে পারে। স্বাধীনতার পর এবারই পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কম আহরণ। পর্যাপ্ত রাজস্ব না আসায় ঘাটতি বাড়ছে।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সরকারের রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত মার্চে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত হিসাবে এই ঘাটতির পরিমাণ আরো বাড়বে।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ১.৩৫ শতাংশ বেশি। তবে এনবিআরের পুনরায় (রিভাইজ) নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। এই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভ্যাট থেকে আসবে এক লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। আয়কর থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা ও শুল্ককর ৯৫৬.৫২ বিলিয়ন।

২০১৯-২০২০ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। ২০২০-২১ অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সেটা অর্জনও দুরূহ হবে বলে মনে করছেন তিনি।

চিঠিতে তিনি বলেছেন, অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে মাঠপর্যায়ে রাজস্ব আহরণকারী কর্মকর্তাদের ওপর এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হয়। অনেকে অসম্ভব বিবেচনা করে একপর্যায়ে হাল ছেড়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে করদাতাদের ওপর হয়রানির অভিযোগ আসে। লক্ষ্যমাত্রা যৌক্তিক হলে কর্মকর্তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রচেষ্টা থাকে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কৃতিত্ব পাওয়ার অনুপ্রেরণা তৈরি হয়। এ অবস্থায় চলতি ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা যৌক্তিকীকরণের অনুরোধ জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

এ জাতীয় আরো সংবাদ