করোনা ভাইরাসে পর্যুদস্ত অস্ট্রেলিয়ায় আঘাত হেনেছে আরেকটি নতুন ভাইরাস। ‘জাপানি এনসেফালাইটিস’ নামের এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কুইন্সল্যান্ড, নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া এবং দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
মশাবাহিত নতুন ভাইরাসে এখন পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ জন।
এখন পর্যন্ত নতুন এই ভাইরাসে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী কোনো বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়নি।
অস্ট্রেলিয়ার ৪টি রাজ্যে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রায় ৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে।
দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মশার কামড়ের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নাগরিকদের সতর্ক করছে। প্রাণী এবং মানুষকে এক ধরনের মশা সংক্রামিত করতে পারে।
ভাইরাসটি পাপুয়া নিউ গিনি এবং টোরেস স্ট্রেইটের কিছু অংশে এর আগে দেখা গেলেও অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে এই প্রথম।
১৮৭১ সালে জাপানে প্রথম প্রাদুর্ভাবের জন্য এর নামকরণ করা হয় ‘জাপানি এনসেফালাইটিস ভাইরাস’ (জেইভি)। ভাইরাসটি শুধু মশা থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ হয়। একজনের থেকে আরেকজনের মধ্যে সংক্রমিত হয় না।
জাপানি এনসেফালাইটিস ভাইরাস ডেঙ্গু এবং হলুদ জ্বরের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মশাবাহিত রোগ।
অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার সোনিয়া বেনেট বলেছেন, ভাইরাসটি অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে নতুন হলেও এটি আন্তর্জাতিকভাবে নতুন ছিল না এবং কয়েক দশক ধরে এর বিরুদ্ধে সফলভাবে ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার ভ্যাকসিন আমদানির ঘোষণা দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় জাপানি এনসেফালাইটিসের বিস্তারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ফেডারেল সরকার একটি পাবলিক ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন শুরু করবে।
ভাইরাসের বিস্তার বোঝার জন্য সরকার মশা এবং অন্যান্য প্রাণীর কার্যকলাপের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। সরকার সম্ভাব্য ভাইরাসের বিস্তারের মডেল তৈরি করছে এবং সেইসঙ্গে মশা নিয়ন্ত্রণ করবে।
মানুষ যাতে বুঝতে পারে কীভাবে নিজেদের রক্ষা করতে হবে, সে জন্য সরকার একটি তথ্য ও সচেতনতামূলক প্রচারণায় ৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করবে।
ভাইরাস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখার জন্য রাজ্য এবং অঞ্চলের কৃষি বিভাগগুলোকে সহায়তা করতে ১০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটির জীবনচক্রটি খুব জটিল। এটি শুধু ‘কিউলেক্স অ্যানুলিরোস্ট্রিস’ বহনকারী নির্দিষ্ট ধরনের মশার ওপর নির্ভর করে না বরং এটি আরও বেশ কিছু প্রাণীর ওপর নির্ভর করে। আমরা সত্যিই বুঝতে পারি না যে এটি কীভাবে আমাদের উপকূলে এই মাত্রায় পৌঁছেছে।’
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
সুত্রঃ ডেইলি স্টার।