মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাসপাতালে সেবা নিতে আসা
রোগীরা। চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হলেই রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু করেন বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা। ছুটির দিন ছাড়া প্রায় প্রত্যেক দিন হাসপাতাল চত্ত্বরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। বেবস্থাপত্র নিয়ে টানা হেচড়ার কারণে রোগীদের হরহামেশাই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পরতে হয়। এমনকি চিকিৎসকের কক্ষের দরজায় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোন ঔষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির দেখা করার নিষেধের কথা লেখা থাকলেও কোম্পানীর প্রতিনিধিদের কেউই তা মানছেন না! এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। সরকারী হাসপাতালে ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের এমন দৌরাত্ম্য দেখে মনে হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে অনেকটাই জিম্মি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আঙিনায় মোটর সাইকেল সারিবদ্ধ ভাবে রেখে রোগীদের ব্যবস্থা পত্রের ছবি তোলার জন্য হাসপাদালের বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষসহ হাসপাতল আঙিনায় ভিড় জমাচ্ছেন ঔষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ভিজিট করে সেবা নিতে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় বেঘাত ঘটাচ্ছেন তারা। চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকে রোগীকে অপেক্ষায় রেখে ভিজিট সেড়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া ঐষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ভিড় জমিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে সেবা নিতে আসা রোগীদের ভির ঠেলে ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশ করে সেবা নিতে হয়। এমনকি ডাক্তার দেখিয়ে বের হওয়ার সময় রোগীদের দাঁড় করিয়ে তাদের হাতের টিকেট না চাইলেও টেনে নিয়ে টিকেটের ছবি তুলে নিচ্ছেন বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা। এর বাইরেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আঙিনায় প্রায় প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে এসব ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যের নানা দৃশ্য। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী বলেন, ডাক্তার দেখিয়ে বের হলে তাদের কোম্পানীর ঔষধ ডাক্তাররা লেখছে কিনা সে জন্য তারা প্রেসক্রৃপশনের ছবি তোলেন। আমরা না চাইলেও অনেকটা জোরাজুরি করেন তারা। এ সংক্রান্তে একাধিক কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা তাদের চাকরী বাচাতে কিছু কমিশনের আশায় হাসপাতাল চত্ত্বর ও চিকিৎসকের কক্ষে ভির জমিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলে কোম্পানিতে পাঠান। এ ব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনজুমান আরা বলেন, আমি তাদেরকে চিঠি দিয়ে নিষেধ করেছি যাতে তারা প্রেসক্রৃপশনের ছবি না তোলে। তাদের ভিজিটিং আওয়ার দেওয়া হয়েছে সে সময় তারা ভিজিট করবে। এক সপ্তাহ আগে আমি ট্রেনিংয়ে ছিলাম। এই সুযোগটাই তারা নিয়েছে। আগামীকাল এ নিয়ে তাদের পুনরায় সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।