1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

নিভৃতচারী শেখ রেহানা

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১১৬ বার
শেখ রেহানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠা কন্যা। বঙ্গবন্ধুর তিন পুত্র ও দুই কন্যার মধ্যে চতুর্থ সন্তান হচ্ছেন শেখ রেহানা। দুর্ভাগ্যক্রমে বা সৌভাগ্যক্রমে পচাত্তরের কালো রাত্রে ঘাতকের নিশানা থেকে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। দুর্ভাগ্যক্রমে এজন্যই বললাম যে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এর পর যখন শুনতে পেয়েছিলেন তাঁদের বাবা বাঙালি জাতির পিতা, বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার স্ত্রী বেগম মুজিব সহ পরিবারের সকল সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনসহ সবাইকে যখন হত্যা করা হয়েছে । এই খবর শুনে তাঁদের তখন কি অবস্থা হয়েছিল সেটা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ আন্দাজও করতে পারবে না । ওই সময় কি ভেবেছিলেন বঙ্গবন্ধুর বেঁচে যাওয়া দুই কন্যা? তাঁরা ঘাতকের হাত থেকে বেঁচে গিয়ে কি সেদিন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল না অপরিসীম যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার শুধু কষ্ট ভোগ করেছেন । বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘদিন কিভাবে বেঁচে ছিলেন তারা সব হারিয়ে, এভাবে কি বেঁচে থাকা যায় ? সে বেঁচে থাকাকে  কি শুধু বেঁচে থাকা বলে?  তখন হয়তো তারা এই নিদারুণ কষ্ট দুঃখ বেদনা সহ্য করে বেঁচে থাকার চাইতে পিতা মাতা ভাইবোন সহ সবার সাথে শহীদ হয়ে যাওয়াটাই বোধহয় ভালো মনে করেছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ও মানুষের দোয়া, ভালোবাসা বা আল্লাহপাক হয়তো তাঁদের বাঁচিয়ে রেখে এই বাংলাদেশের জন্য কোন মঙ্গল এর ব্যবস্থা করবেন সেই কারণে সেদিন দুই বোন বেঁচে গিয়েছিলেন। শেখ রেহানা তো সেদিন বেশ ছোট ছিলেন। কেমন লেগেছিল সেদিন সেই সময় গুলোতে; তা নিজেই তিনি বলেছেন “শেখ হাসিনা এ ডটার্স টেল” সিনেমায় শেখ রেহানা বলেছেন, আমরা সেই সময় যে পাগল হয়ে যায়নি, আমরা যে বেঁচে ছিলাম সেটাই অবাক করা ব্যাপার।
কত অল্প বয়সে বাবা-মা-ভাই-বোনকে হারিয়ে বড় বোন শেখ হাসিনার স্নেহ-মমতায় দীর্ঘ সমস্যাসঙ্কুল পথ পাড়ি দিয়ে ৬৬ বছর পার করে ৬৭ বছরে পা দিলেন। এই উপমহাদেশের সবচাইতে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান,নিভৃতচারী নির্লোভ, সজ্জন, স্নিগ্ধ রুচির পরিচ্ছন্ন ব্যাক্তিত্বের অধিকারী, মমতাময়ী শেখ রেহানাকে কোন বিশেষণে ভূষিত করা যায় । জীবনে যেমন কষ্ট করেছেন,দুর্বিষহ জীবন যন্ত্রণা বইতে হয়েছে, একটি দেশের প্রতিষ্ঠাতার কন্যা হিসেবে বিদেশ-বিভুঁইয়ে কাজ করে খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়েছে। সন্তানদেরকে নিয়ে দিনের-পর-দিন নিদারুণ কষ্ট করতে হয়েছে । আবার সেই কষ্টের পরে বিরাট ক্ষমতার হাতছানি বা ক্ষমতার মধ্যেমনি হয়ে থেকেও  যে সহজ-সরল নির্লোভ পরোপকারী সাদামাটা জীবন যাপন করা যায় বা মানুষের মঙ্গলে কাজ করা যায়, তার প্রমাণ শেখ রেহানা। তার বড় বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুধু ছোটবোনের মমতায় বা শ্রদ্ধার জায়গা থেকে নয় অনেক সময় একজন অভিভাবকের ন্যায় সুপরামর্শ দিয়ে থাকেন। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও ক্ষমতা  তাঁকে এক বিন্দু পরিমানও স্পর্শ করতে পারে নাই । তিনি সবসময় নেপথ্যে থেকে বোন শেখ হাসিনাকে সৎ পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে চলেছেন। আমরা প্রায়ই পত্রপত্রিকায় তার নানা মানবিক চিন্তা চেতনার প্রতিফলন দেখতে পাই, যেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন করেন এবং অবলীলায় তিনি বলে থাকেন এই কাজের পিছনে পরামর্শ ছিল শেখ রেহানার এবং প্রায় সব কাজই মানবিক যা আমাদের সমাজে প্রায়ই চোখের আড়ালে থেকে যায় । সেই সব জিনিসকে খুঁজে বের করে তিনি তার সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেন বা তার সমাধান দিয়ে থাকেন। তিনি নিজে ক্ষমতায় না থাকলেও পিতার মতো, বড় বোন শেখ হাসিনার মতো দেশের মানুষকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ভাবেন চিন্তা করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সৎ পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন পাশে থাকেন। মানুষ হিসেবে তিনি যেমন সাদাসিধে, মহৎপ্রান, দয়ালু ঠিক তেমনি মা হিসেবে একজন সফল মা। তিনটি সন্তানকেই সুশিক্ষিত যোগ্য মানুষ হিসাবে গড়ে তুলেছেন। তাঁর বড় কন্যা টিউলিপ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একাধিকবার নির্বাচিত এমপি । তাঁর একমাত্র পুত্র রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি একজন সুশিক্ষিত আধুনিক চিন্তায় মননে গড়ে ওঠা এক তরুণ  যে তার মা এবং খালাকে প্রতিনিয়ত ক্ষমতার অন্তরালে থেকে দেশের জন্য কাজ করতে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তার ছোট কন্যাও স্বমহিমায় উজ্জ্বল।
শেখ রেহানা প্রিয়জন বা পরিচিত জনদের কাছে ছোট আপা হিসেবে পরিচিত। দলীয় নেতাকর্মীদের কাছেও তাই। শেখ হাসিনা যেমন সবার কাছে আপা বা বড় আপা, শেখ রেহানাও তেমনই সবার কাছে ছোট আপা। বঙ্গবন্ধুও যেমন তাঁর সময়ে সবার কাছে ছিলেন মুজিব ভাই। মানুষকে কত ভালোবাসলে বা মানুষ মানুষকে কি পরিমান ভালোবাসলে বা মানুষের ভালোবাসা পেলে এমন আপন করে নিতে পারেন তার প্রমান বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যাদ্বয়। মানুষের ভালবাসাই এঁদের সম্বল।ছোট বোন হিসেবে শেখ রেহানা যেমন বড় বোন শেখ হাসিনাকে সাহস দেন, সহযোগিতা করেন, পরামর্শ দেন কিন্তু ক্ষমতার ধারেকাছেও থাকেন না এমনটি ক্ষমতার রাজনীতিতে বিরল। সব সময় দুই বোন যেভাবে লতায় পাতায় জড়িয়ে থাকেন এবং বড় বোনকে তাঁর ব্যস্ততার মাঝেও তাঁর যেমন টেককেয়ার করেন, আমরা যেমনটা দেখতে পাই শীতের মধ্যে নিজের গায়ের চাদর বোনের গায়ে জড়িয়ে দেন আবার সকালবেলা ব্যস্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বড় বোনকে এক কাপ চা বা কফি বানিয়ে দেন। কোন প্রিয়জন বা দলীয় নেতৃবৃন্দ বা কর্মী মৃত্যুবরণ করলে পাশে থেকে যেভাবে সমবেদনা জানান, ঠিক সমস্ত সংকটে বিপদে যেভাবে পাশে থেকে সহযোগিতা করেন, এখান থেকে মানুষ হিসেবে আমাদের সবারই শেখার আছে অনেক কিছু । বঙ্গবন্ধু কন্যাদের পরস্পর পরস্পরের প্রতি যেমন শ্রদ্ধা, স্নেহ, মায়া মমতা, ভালবাসা তা বাঙ্গালীর প্রতিটি পরিবারেই যদি এমন হতো সত্যিই আমরা বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করতে পারতাম।  চিরন্তন বাঙালির প্রতিচ্ছবি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বেঁচে যাওয়া দুই কন্যা । তাঁর ছোট কন্যা শেখ রেহানার আজ জন্মদিন। যে পঞ্চান্ন বছর বয়সে পিতা বঙ্গবন্ধু ঘাতকের বুলেটে প্রাণ হারিয়েছিলেন তার থেকে এক যুগের বেশি বয়সে পা দিলেন তার এই ছোট কন্যা শেখ রেহানা । নিভৃতচারী, প্রেরণাময়ী, নির্লোভ, নিরোহঙ্কার, আত্মপ্রত্যয়ী, সৎ সাহসী ও দেশপ্রেমিক শেখ রেহানা সুস্থভাবে আরো অনেক দিন এই বাংলার শ্যামল সুন্দর পরিবেশে বেঁচে থাকুন। ভালো থাকুন বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার অতি আদরের ছোট কন্যা এবং আমাদের ভালোবাসা এবং আবেগ অনুভূতির শেষ আশ্রয়স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের ছোট বোন শেখ রেহানা। আল্লাহ তায়ালার কাছে সেই দোয়া করি। শুভ জন্মদিন ছোট আপা।লেখকঃ সদস্য,কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি,
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

এ জাতীয় আরো সংবাদ