বিশাল আকারের কালো রংয়ের দেহ। ১০ ফুট লম্বা ও উচ্চতা ৬ ফুট, পাহাড়ের মত দেখতে বলেই আদর করে নাম রাখা হয়েছে ‘কালো পাহাড়’।
বলছিলাম রাজবাড়ীর ৩০ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় কালো পাহাড়ের কথা। ষাঁড়টির মালিক নিজাম মহাজন (৩৫)। তিনি কালো পাহাড়ের দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড অলংকারপুর গ্রামের খামারি নিজাম মহাজন এই ষাঁড়টি গত ৪ বছর ধরে লালন পালন করে আসছেন। খামারির নিজের খেতে উৎপাদিত প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার ও কাঁচা ঘাস খেয়ে পরম মমতায় বেড়ে উঠেছে ‘কালো পাহাড়’।
৩০ মণ ওজনের বিশাল আকারের ‘কালো পাহাড়’ এর খাবার মেনুতে কাঁচা ঘাস, ভূট্টা, গম, খেসারির ভূষির মত প্রাকৃতিক খাবারের পাশাপাশি কলা, আপেল, কমলা, বেদানা, বেগুন ও মৌসুমি ফল আমও রয়েছে।প্রতিদিন কালো পাহাড়ের জন্য খামারির ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা। লম্বা ও উচ্চতায় ফিতার মাপে কালো পাহাড়ের ওজন ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ মণ। পবিত্র ঈদ উল আজহা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারি ষাঁড়টির দাম চেয়েছেন ১৫ লাখ টাকা।
খামারি নিজাম মহাজন বলেন, আমার বাড়িতে পালিত গাভীর পেট থেকে ৪ বছর আগে জন্ম নেয় এই ষাঁড় গরুটি। সম্পূর্ণ কালো রং ও এর দৈহিক বৃদ্ধি দেখে আদর করে নাম রাখি ‘কালো পাহাড়’। এখন ষাঁড়টির ওজন ৩০ মণ। আমি নিজের সন্তানের মত আদর করে ষাঁড়টিকে বড় করেছি। চার দাঁতের কালো পাহারের দাম চাচ্ছি ১৫ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে সাড়ে ১০ লাখ টাকা দাম উঠেছে। কালো পাহারকে দেখতে প্রতিদিন আমার বাড়িতে ভিড় করছেন গ্রাম ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। আমি বাড়ি থেকেই ষাঁড়টি বিক্রি করতে চাই।
স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো. ফিরোজ লস্কর বলেন, আমি আমার এ জীবনে এতো বড় ষাঁড় কখনো দেখিনি। এ বছর শুধু আমাদের বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়ন নয় রাজবাড়ীসহ আমাদের আশপাশের কয়েকটি জেলায়ও এতো বড় ষাঁড় মনে হয় আর নেই। ৩০ মণ ওজনের বিশাল দেহের কালো রংয়ের ষাঁড়টি সত্যিই দেখতে পাহারের মতন। খামারি দাম চাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা।
স্থানীয় মোকাদেস হোসেন বলেন, খামারি নিজাম মহাজন আমার প্রতিবেশী। গত ৪ বছর ধরে তিনি অনেক পরিশ্রম করে নিজের খেতে উৎপাদিত ঘাস, খড়, গমের দানা, ভূট্টার দানা, বেগুন, আম, কলা, আপেলসহ নানাবিধ দানাদার খাবার খাইয়ে ষাঁড়টিকে ৩০ মণ ওজনের তৈরি করেছে।
আরেক প্রতিবেশী সাইদ বলেন, খামারি নিজামের ৩০ মণ ওজনের বিশাল আকারের ষাঁড়টিকে হাটে নিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাই বাড়িতেই বিক্রি করতে চাচ্ছেন।
রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল হক সরদার জানান, এ বছর রাজবাড়ীর বিভিন্ন পশুর হাটে রোগাক্রান্ত পশু শনাক্ত ও চিকিৎসা সেবা প্রদানে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে ভেটেনারি মেডিকেল টিম থাকবে। জেলায় সাড়ে আট হাজার খামারে ৫৪ হাজার ৫২৫টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। সরকারি হিসাব মতে, এ বছর ১৪ হাজার ৯৮৫টি ষাঁড়, ৩৩ হাজার ১০টি ছাগল, ছয় হাজার ২০০টি গাভী, ৩০টি মহিষ, ৩০০টি ভেড়া কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।