হিমালয় কন্যা খ্যাত পঞ্চগড়ে শরতের প্রথমেই শীতের আমেজ অনুভব হচ্ছে। দিনে গরম আবহাওয়া থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই প্রকৃতি যেন জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। রাতভর টিপটিপ করে শিশির পড়ছে। খোলা মাঠে দুর্বা ঘাসের উপর চিকচিক করছে শিশির ফোটা। ভোরে ফসলের মাঠ, সবজি ক্ষেত ভরে যায় শিশিরে। সোমবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শীতপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত পঞ্চগড়ে প্রতি বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর-জানুয়ারি কনকনে শীত থাকে। তবে শীতের আমেজ শুরু হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই। প্রতি বছরের মতো এবারও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমতে থাকে। ক’দিন ধরে পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। রোববার জেলায় সর্বনিম্ন ২১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। এ দিন সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয় ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে দিনে গরম ও রাতে শীতের কারণে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাড়ছে শীতজনিত রোগবালাই। বিশেষ করে শিশু ও বেশি বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে জায়গা না হওয়ায় মেঝে বা বারান্দায় স্থান নিয়েছেন অনেক রোগী।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, অন্য এলাকার তুলনায় পঞ্চগড়ে প্রতি বছর আগেভাগেই শীত শুরু হয়। আর ঋতু পরিবর্তনের সময় সাধারণত অনেকেই ভাইরাসজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়। বর্তমানে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন।
জেলা শহরের ইসলামবাগ মহল্লার রইসুল আলম বলেন, দুই তিনদিন ধরে সন্ধ্যার পর থেকে শীত লাগছে। ফজরের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হলে কুয়াশা দেখা গেছে। সোমবার সকালে বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশা ছিল। রাতে শীতের কারণে কাঁথা গায়ে দিতে হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, সোমবার সকালে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার সর্বনিম্ন ২১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই দিন সর্বোচ্চ ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, হিমালয় কন্যা হিসেবে পরিচিত পঞ্চগড়ে অন্য জেলার তুলনায় আগেই শীত শুরু হয়। কয়েকদিন ধরে শীতের আমেজ অনুভত হচ্ছে। শীত নিয়ে দুঃস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।