শেখ সাহেব খ্যাত রশিদ মাস্টারের আজ ১৯ তম মৃত্যু বার্ষিকী। ২০০৪ সালের আজকের এই দিনে (২০ ডিসেম্বর) তিনি মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর ১৯ বছর পার হলেও শিক্ষক সমাজ, সাধারণ জনগণ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রয়াত রশিদ মাস্টারের বিচরণের স্মৃতি আজও মানুষের মুখে মুখে। সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসমহল বালুচর গ্রামের মুন্সী বাড়ির সম্রান্ত মুসলিম পরিবারে রশিদ মাষ্টার জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ইন্তাজউদ্দিন মাষ্টার ও মাতা নূরজাহান বেগম শিক্ষিত হওয়ার সুবাদে তিনি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হন। ধর্মান্ধ ও কুসংস্কারচ্ছন্ন সমাজে বসবাস করেও তিনি একাধারে সমাজ সংস্করক, অভিনেতা, নাট্যকার, আবৃতিকার ও শিক্ষক ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী ঢাকা জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রশিদ মাষ্টারের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে এবং সেইসব নাটকে তিনি অ়ভিনয়নও করেন। বাংলাদেশের কিংবদন্তী অভিনেতা প্রয়াত নায়ক রাজ্জাক ছিলেন তার নিকটতম বন্ধু। অভিনয় জগতের পাশাপাশি তিনি ছিলেন কবিতা আবৃতিতে বেশ পারদর্শী। মুন্সীগঞ্জের সেরা আবৃতিকার হিসেবে রশিদ মাষ্টারের খ্যাতি ছিল। নটরাজ হিসেবে তার সুপরিচিতি ছিল। তার চমৎকার কন্ঠের জাদুতে মানুষ ছিল মুগ্ধ। বক্তা হিসেবে তিনি ছিলেন দক্ষ। অবিকল বঙ্গবন্ধুর কন্ঠ তার কন্ঠে ফুটে উঠতো। তার বক্তব্য শোনার জন্য এলাকার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত মর্মে এখনো বেশ জণশ্রুতি রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা। তার পিতা ইন্তাজ উদ্দিন মুন্সী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহপাঠী। সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ছিল রশিদ মাষ্টারের অগাধ শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার এই প্রেমের কারণে এলাকার জনগণ তাকে ভালোবেসে শেখ সাহেব বলে ডাকতো। তিনি তার আদর্শীক সমমনাদের নিয়ে সিরাজদিখানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জয় বাংলার সমর্থকদের একত্রিত করেছিলেন। ১৯৭৫ এর পরবর্তী সময়েও যারা সিরাজদিখানে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে রেখেছিল রশিদ মাস্টার তাদের মধ্যে অন্যতম।
প্রতিবছর রশিদ মাষ্টারের প্রয়ান দিনে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মার শান্তির জন্য স্থানীয় মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করা হয়। এ বছরেও তার ব্যতিক্রম নয়। এছাড়া তার মৃত্যু বার্ষিকীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করেন থাকে। রশিদ মাষ্টারের রাজনৈতিক জীবনের বন্ধু ও সহযোদ্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই শ্রদ্ধার ভরা স্বরণে বলেন “রশিদ মাষ্টার আমাদের জন্য প্রেরণার। তিনি সিরাজদিখানে রাজনীতির ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি শুধু সিরাজদিখান নয় পুরো মুন্সীগঞ্জের গর্ব। সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামীলীগ সবসময়ই তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।”