—নমস্কার। আমি সুকুমার বোস।
—নমস্কার। জ্বী বলুন ?
—আপনি বুঝি দুর কোথাও যাবেন?
—নাতো! এই কাছাকাছি।
—অনুমতি যদি দ্যান, কিছু কথা বলার সাহস পাই।
—বেশ তো।
—নাম জানা নেই। কি নামে শুরু মণি, মণিকা না মণিমালা?
—দূচ্ছায়। ওই নাম ভাল্লাগে না।
—কেন?
—বড্ড বেশী সেকেলে। মেয়েবেলায় বাপ-ঠাকুর্দা, জ্যাঠা-জ্যেঠি ডাকতেন আমায়।
—যদি বলি রুপসী? রুপার মতো সাদা চকচকে
—উহু, হয়না । সেকেন্ড হ্যান্ড,
—কি?
—রুপ কি শুধু দেহে থাকে না মনে। সেসব আমার সবই আছে। এমন একটা নাম আন্দাজ করুন, যা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
—কৃষ্ণা?
—মোটেও তা না।
—উউউউউ, সেঁজুতি।
—তাই বুঝি? সন্ধ্যার ক্ষীণ দীপ, উদয়াচলে রবির আগমনে যার সমাপ্তি।
—তাহলে শুকতারা ডাকা যায় হয় নি?
—না না,
— অমন আঁতকে উঠলেন যে,
—এমনি ।
—- আমি কি তবে ভুল ?
—নিশ্চয়ই।
—ক্যামোন হবে?
—ভয় লাগে যে। আমি নিভতে চাই না।
—য্যামোন?
—সন্ধ্যা রাতে দপদপ করে জ্বলে গগনে, মধ্যরাতের আগে যায় নিভৃতে। আমি শুকতারা না, অন্য কোনো নাম?
—তবে নয়ন তারা না হয়েই যান না। গভীর কালো আয়তলোচন দু’নয়নের মাঝের তারা,
— সেও যে ধরা ছোঁয়ার মধ্যে হলো। আপনি আনাড়ি। পারবেন না জানি।
—তবে,
—এই রে আমার স্টেশনে ট্রেন লাগছে বুঝি। নামার সময় হয়ে এলো। এবার তবে আসি। ধন্যবাদ
একটুক্ষণের মধ্যে ট্রেন গিয়ে থামলো। ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া ছেলেটার সামনে দিয়ে নেমে গেল মেয়েটি। ওদের পথের আলাপ পথেই শেষ। আর নাম জানা হয় না।