জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে আদালত বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যদি সম্মতি দেন তাহলে তার চিকিৎসার জন্য নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ড বিএনপি চেয়ারপারসনের বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট শুরু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
এই পর্যবেক্ষণসহ আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি শুরু হয়। সেই শুনানি চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
জানা গেছে, শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতিসহ ছয় বিচারপতি খাস কামড়ায় যান। সেখানে শুনানি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আবার এজলাসে আসেন। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির আবেদন খারিজ করে দেন।
আজ সকালে শুনানির শুরুতে আদালতের কাছে খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবর।
এর আগে গত বৃস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) তার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন না পেয়ে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি পেছানোয় আদালত কক্ষে নজিরবিহীন হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। জামিন শুনানির দিন এগিয়ে আনার দাবিতে বিএনপি-সমর্থক আইনজীবীরা আদালতকক্ষের ভেতরে প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ মিছিল করেন। হট্টগোল শুরুর পর থেকে সেদিন আপিল বিভাগ একটি মামলারও শুনানি করতে পারেনি।
গত ২৮ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন চান আপিল বিভাগ।
সেদিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। অসুস্থতার বিষয়টি উল্লেখ করে তাকে মানবিক কারণে জামিন দিতে খালেদার আইনজীবীর আবেদনের পর ওই আদেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু ৫ ডিসেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন প্রস্তুত ও দাখিলের জন্য সময় আবেদন করেন। পরে আপিল বিভাগ খালেদার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কিত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলে ১২ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়াকে এ মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন। মামলার বাকি সব আসামিকেও একই সাজা দেওয়া হয় এবং ট্রাস্টের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘোষণা করেন আদালত। সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন না পেয়ে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড দেওয়ার পর আদালত খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।