বর্তমানে বিশ্বে যে ইন্টারনেট ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে তা মূলত মার্কিন কম্পিউটার সার্ভারের একটি নেটওয়ার্ক, যেখানে পরবর্তীতে সারা বিশ্ব যুক্ত হয়েছে। এ নেটওয়ার্কের ওপর সর্বদা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব রয়েছে। তবে রাশিয়া ও চীন এই নেটওয়ার্ককে (ইন্টারনেটকে) কখনোই পুরোপুরি বিশ্বাস করেনি। মার্কিন প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে নিজেদের ব্যবহারের জন্য ‘বিকল্প ইন্টারনেট’ তৈরি চেষ্টা করছিল দেশদুটি। অবশেষে তা সফল হতে চলেছে।
ইন্টারনেটের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার সরকার মঙ্গলবার এ ঘোষণা দিয়েছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিকল্প ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে দেশটির সরকারি ওই বিভাগ বলেছে, সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের কোনো পার্থক্য বুঝতে পারবেন না। এ পরীক্ষার ফলাফল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে পেশ করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা এভাবে ভেঙে ফেলার বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক অ্যালান উডওয়ার্ড বলেন, দুঃখজনকভাবে রাশিয়ার পদক্ষেপ ইন্টারনেট ভেঙে ফেলাকে ত্বরান্বিত করার আরেকটি উদ্যোগ। যেসব কর্তৃত্বপরায়ণ দেশ নাগরিকদের ওপর অধিক নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তারা এ পথে হাঁটে। ইরান ও চীন তারই উদাহরণ। এর অর্থ হচ্ছে, দেশের মধ্যে কোথায় কী ঘটছে, সে বিষয়ে মানুষকে সঠিক তথ্য জানতে না দেওয়া। তাদের নিজেদের মতবাদের ওপর জনগণকে আটকে রাখা।
রাশিয়ার নতুন এ উদ্যোগের ফলে দেশটির নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে। ইতিমধ্যে ইয়ানডেক্স, মেইল ডটআরইউয়ের মতো সিস্টেম তৈরি করে প্রযুক্তি জগতে এগিয়ে রয়েছে রাশিয়ান। ইতিমধ্যে রাশিয়ান নিজস্ব উইকিপিডিয়া তৈরি এবং রাশিয়ার তৈরি সফটওয়্যার প্রিইনস্টল না থাকলে স্মার্টফোন বিক্রি বন্ধ করার মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়া করেছে, তারা নিজেরাই শুধু এ ইন্টারনেট ব্যবস্থা ব্যবহার করবে না। পরবর্তীতে তারা ব্রিক্সভুক্ত দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকেও ব্যবহার করতে দেবে। এরপর তা অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। সে পর্যায়ে এটি বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবস্থার বিকল্প হয়ে উঠবে।