দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন প্রায় চার দশক ধরে বাংলা গানের জগতে বিচরণ করছেন। বিভিন্ন ধারায় ও মিশ্র আঙ্গিকের সুরে শিল্পীর অবাধ যাতায়াতে সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। সব ক’টা জানালা খুলে দাও না, জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো, মাঝি নাও ছাড়িয়া দে, সুন্দর সুবর্ণসহ অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী তিনি। চলচ্চিত্রে ১২ হাজারেরও বেশি গান করেছেন দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই সংগীত শিল্পী।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য গানে কাজ করলেও এবারই প্রথমবারের মত সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। বরেণ্য অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা সারাহ বেগম কবরীর অনুদান প্রাপ্ত ‘এই তুমি সেই তুমি’ সিনেমার সংগীত পরিচালনার মধ্যে দিয়ে আত্মপ্রকাশ করবেন সাবিনা ইয়াসমিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংগীতশিল্পী নিজেই।
সাবিনা ইয়াসমিন এবারই যে প্রথম সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব পেলেন তা নয়। এর আগেও অনেকবার পেয়েছেন কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রতিবারই। সাবিনা ইয়াসমিন ও কবরীর বন্ধুত্ব চার দশকের বেশি সময়ের। সাবিনার গাওয়া অসংখ্য গানে সিনেমার পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছেন কবরী। সংখ্যায় গুনলে তা হাজার ছাড়িয়ে যাবে। বন্ধু কবরীর অনুরোধ ফেলতে পারেননি সাবিনা। রাজি হলেন অবশেষে। এবার কবরীর ছবিতেই সাবিনা ইয়াসমিন সংগীত পরিচালনা করবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমাকে বেশ কিছুদিন ধরে বলছিল। শুরুতে না করছিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুরোধ ফেলতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সুর ও সংগীতে অন্য শিল্পীরা গাইবেন, ভাবতেই ভীষণ আনন্দ লাগছে। একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা হবে। নতুন বছরে গান তৈরির কাজ শুরু হবে। কোনো চাপ লাগছে না। পরিচালক যেহেতু কবরী, আমি আমার কাজটা স্বাধীনমতো করতে পারব। পরিচালকের পছন্দের ব্যাপার তো থাকবেই। সব মিলিয়ে ভালোই হবে বলে মনে হচ্ছে।’
১৯৬৭ সালে জহির রায়হানের ‘আগুন নিয়ে খেলা’ ছবিতে আলতাফ মাহমুদের সুরে ‘মধু জোছনার দীপালি’ গান দিয়ে যাত্রা শুরু সাবিনা ইয়াসমিনের। এরপর পেরিয়ে গেছে ৫২ বছর। দীর্ঘ চার দশকের ক্যারিয়ারে নতুন বছরের শুরুতেই আত্মপ্রকাশ করবেন সংগীত পরিচালক হিসেবে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হবে ‘এই তুমি সেই তুমি’ সিনেমার শুটিং। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই ছবির চিত্রনাট্য তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সিনেমাটির মধ্য দিয়ে চার দশক পর আবার পর্দায় জুটি হবেন সোহেল রানা ও কবরী। পরিচালনার পাশাপাশি ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা কবরীর।