এই দুনিয়ার সবাই নিতে চায় সবসময়। দিনের আলোয়, রাতের অন্ধকারে সমানভাবে। সমাজে এইরকম মানুষ বেশি। গিজগিজ করছে চারপাশে। তাদের দেবার চাইতে, নেবার নেশার জোর অনেক। অমুক তমুক নেশা বা ইন্টারনেট নেশার চেয়েও সেই নেশা ভয়াবহ। কম লোকই তুই পাবি, যিনি আনন্দ, পরিতৃপ্তি ও পরিপূর্ণতার জন্য নিজের সার্থকতা ও ঐশ্বর্য বিলিয়ে দেন।
মহান স্রষ্টার সৃষ্টি, প্রকৃতি এবং প্রাণী দুইই। অথচ এ দুয়ের মাঝে তফাত আসমান- জমিন। প্রকৃতি সব স্বার্থের উর্ধ্বে। প্রকৃতি বিরল।সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর সবকিছু চলছে। চলবে। সেই সূর্য কতটুকু নেয়? সবকিছুই তো বিলিয়ে দিচ্ছে। সূর্যের জ্বলা বুকে নিয়ে চাঁদ মিষ্টি আলোয় ভরিয়ে দেয় অন্ধকারাচ্ছন্ন রাতের সারা পৃথিবী।পাহাড় পর্বতের বুকের ক্ষীণ ফল্গুধারা নিয়ে নদী নিজেকে ভরিয়ে তোলে। কিন্তু সব সঞ্চয় সমুদ্রে ঢেলে দিয়ে তার আনন্দ, পরিতৃপ্তি । আবার সমুদ্র নদীর অসংখ্য জলকনা জলীয়বাষ্প হয়ে মেঘের কোল থেকে পুনরায় বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে মাঠ-ঘাটে। তখন শস্য – ফল-ফুলের ভারে তাবৎ পৃথিবীর কত যে উল্লাস, আনন্দ । আর প্রাণী কূল বিষয়ে নাইবা বর্ণনা দিলাম। চোখ, কান খোলা রাখ, নিজেই দেখবি, শুনবি কত রং বেরংয়ের সব প্রাণী।
বাবন, তোকে আমি সূর্য্য হতে বলি। প্রকৃতি হতে উপদেশ দেই। আমি জানি, সন্তানাদি নিয়ে অত স্বপ্ন দেখতে নেই। কিন্তু মা-যে? মায়েরা খুব স্বপ দেখে। কত কি – না ভাবে। আমিও ভাবছি। আমার *বাবন* এই হবে,ওই হবে, কত কিসব। হাসপাতালে একটা গন্ধ থাকে। বিচিত্র গন্ধ। এখানে এত সাফ-সাফাই হচ্ছে (দিনে তিন – চার বার) তারপরও। আমার ভালো লাগেনা। কেমন বমি বমি লাগে।
এই ঘরটায় সেরকম গন্ধ নেই। হৈ- হুল্লোড়, চ্যাচামেচি নেই। পাশের ঘরের নূন্যতম শব্দ আসেনা। এখানে অনেক আরাম। পেছনের দরজা খুলে দিলেই স্বার্থহীন প্রকৃতির অবাধ সান্নিধ্য পেতে পারি। মুক্ত আকাশ যেন আমার ঘরে লুটিয়ে পড়ে । আলোকিত উষ্ণতার চারপাশ । বেডে শুয়ে হাতে ছোঁয়া যায়। কিন্তু প্রবল অসুস্থ শরীর ও মন খারাপের মধ্যে তোর অনুপস্থিতি অন্তরে দগ্ধায়।
রুগ্ন শরীর আর বয়সী মানুষের আবেগ বেশি। বয়স না হলেও রোগের শরীর ও মন। তোকে না দেখতে পেয়ে মোটেও ভালো লাগে না বাবন।
মানুষের নাকি আস্তে আস্তে সব সয়ে যায়। কিন্তু আমার হচ্ছে কি? এতসব কিছুর মধ্যে ডুবে থাকি। অথচ মনে হয় আমার কি যেন নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কাঙাল আমি। ইচ্ছে করলেই আমি হা – হা হাসতে পারছি না, গলা ছেড়ে গাইতে পারবো না, হাউ – হাউ উচ্চেরবে কাঁদতে পারবো না। এ কেমন বন্দিশালা? কী যন্ত্রণা? আমার বুকের ভেতর ভার হয়ে আছে। ডাক ছেড়ে কাঁদতে পারলে যে বুকের মস্ত ভারটা হালকা হয়ে যায়। কিন্তু কাঁদা যাচ্ছে না। সবাই আমাকে পাগল ঠাওরাবে। তাই নিরবে গুঙিয়ে উঠি। চোখের জল গড়ায়।
গতকাল বিকেলের দিকের একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা শোনাই তোকে । কেয়ার টেকার আবেদ আলীর সাথে জোরে কথা বলছি, বারান্দায় দাঁড়িয়ে। আবেদ আলী কানে কম শোনে।
এদিকে দেশে কথা বলতে গেলে ঘরের ভিতর থেকে লাইন পাওয়া যায় না। বাইরে অথবা নীচে আসতে হয়। বলা কওয়া নেই, আমার অদূরের প্রতিবেশী বার তিনেক তার ঘর থেকে বেরিয়ে লাল চক্ষু মেলে নিরবে শাসাচ্ছেন।
আমি প্রথমে তার রাগের উদ্দেশ্যটা বুঝিনি। ওর রক্ত চক্ষুকে আমলে না নিয়ে কথা বলছি তো বলছিই । আমার কথা বলবার অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে। অনেক কষ্টে লাইন পেয়েছি।
গোঁয়াড় অসভ্য লোক এইবার গালি গালাজের সাথে চীৎকার জুড়ে দিল। ছিঃ। ভাষার কি ছিরি। একেবারে অযাথায় ঐসব । আমায় যা-তা বলছে।
ঠোঁট কামড়ালাম। যা হবার হবে। এখন আর কোনো মানে হয় না এসব নিয়ে ভাবার। আমি কোনো অন্যায় করছি না, এটাই আসল কথা। কারণ আমার এখান থেকে তার কক্ষ বেশ দূরে। খুব মনোযোগ ছাড়া আমার কথা বারান্দায় দাঁড়িয়েও তার শোনার কথা না। অথচ সে ঘরের ভেতর থেকেই শুনলো?
সে যা বলছে, হিব্রু ইহুদিদের ভাষা। এখানে প্রচুর ইহুদী আছে। সেটা বোঝা যায়। কিন্তু এযে কি হিন্ডি- পিন্ডি বলা ধরেছে জড়ানো গলায়। বিচিত্র সব শব্দের সমাহার । তার বিন্দুবিসর্গ আমি বুঝছি না। তা বলে আমার কথা থামাবো কেন? বা ওর ভয়ে সরে যাবো কেন?
আমার ও জেদ চাপে। তার সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করতে গেলে আমার চলবে না। প্রয়োজনে সে তার ঘরে দোর দিয়ে বসুক গে। অথবা যা বলছে তাই বলতে থাকুক । আমার কথা আমি শেষ করে নিই। আবেদ আলী এমনিতেই খুব নীরিহ ও প্রভু ভক্ত। এ কারণেই আমি ওকে বিদায় দিইনা। নইলে উল্লুকা পাঠ্ঠা কানে যে শুধু কম শোনে তা কিন্তু না। অল্পেই ভুলে বসে সব। বুঝতে দেরি করে। একই কথা বারবার মনে করিয়ে দিতে অনেক কথা খরচা করতে হয় ওর পেছনে। সেন্ট্রুমের রোগী লোকটার গলায় বেজায় জোর। এতখানি জোর, কান কালা যে আবেদ আলী, তারও কানে পৌঁছে যায় চীৎকার ।আবেদ আলি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে, “ম্যাডাম ওতো চ্যাচামেচি কিসের? আপনার ওখানে খারাপ কিছু ঘটেনি তো ?” হৈ- হল্লা কি আর চাপা থাকে? ইতোমধ্যে খবর রাষ্ট্র হয়ে গেছে চতুর্দিকে । নীচের থেকে ছুটে এসেছে গার্ড সিকিউরিটি, ডাক্তার এবং কর্মীর দল। রোগীরা বেশিরভাগ নীরিহ ভদ্র ও সভ্য।তৃতীয় তলার প্রায় অনেকেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে একে একে । সবাই ছি ছি করছে লোকটাকে । সে গা করলে তো???
লোকটার পানের মাত্রাটা বোধহয় বেশি ছিল। কোয়ার্টার মাইল জুড়ে ওর মুখের ভক ভক করা দূর্গন্ধ।বেসামাল অবস্থা। ওরা সেসব ছাইপাস পানির মতো খায় তো। হিসেব করেনি। গার্ড সিকিউরিটি যা বোঝার বুঝেছে । তারা ওর ঘর তল্লাশি করে সবার সামনে হাজির করলো ডজন খানেক ভরা ও খালি বোতল।
ব্যস আর যায় কোথায়? শুরু হলো ডাক্তারের জেরার পরে জেরা আর নোট করা।
লোকটা সমানে হাত পা নেড়ে, আমাকে দেখিয়ে প্রতিবাদ করছে। আমিও কম নির্লজ্জ না। সে ঘর থেকে না বেরুলে তো অপ্রীতিকর ঘটনাটা ঘটতো না। আমায় দুষছে কেন মিছেমিছি?
তার ধরা খাওয়া নাজুক অবস্থা বুঝে মিট মিট করে হাসছি। লোকটার শাস্তির প্রয়োজন।
একটুপর লোকটাকে সবাই মিলে জোর করে ঠেলেঠুলে বেডে শোওয়ালো। বোঝা যাচ্ছে, সে ভালোই শক্তিশালী। তাকে চেপে ধরে দ্রুত বেঁধে ছেদে, কি সব ইনজেকশন পুশ করেছে ডাক্তার । এবং তার পরপরই কোথায় যে নিয়ে গেছল। আল্লাহ জানেন। এখানে আর তার ছায়া দেখিনি।
তবে প্রতিবেশীদেরকে বলাবলি করতে শুনেছি, লোকালয়হীন দূরের কোন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দিয়ে পাঠানো হয়েছে তাকে। দীর্ঘ মেয়াদী বন্দি থাকতে হবে। শোধন হলে তারপরে অন্য ব্যবস্থা।
অবশ্য পরে আমার খারাপ লাগে। নরম মন। একাই লজ্জিত হই। আমি স্বার্থপর না হয়ে সরে গেলেই ঝামেলা হতো না। যাইহোক, এই ব্যাপারটায় উপকার হয় । আমার পরানেও ডর লাগে। নিজের কান্না কাটি বন্ধ না হলেও জোর কিছুটা কমে আসলো । আবার কখন, কোথায়, নতুন কোন জায়গায় ঠেলে নিয়ে রাখে । নির্ধারিত সময়ের চাইতে দিনের সংখ্যা বাড়ায় ফেলে কি না?আমাদের দেশের ডিটেনশনের মতো। ঠিক ঠিকানা নেই। এইখানে যেমন আছি,চেনা পরিচিত হয়ে গেছে। ভালোই তো আছি। সে যাক গে!
এমনিতেই নিস্তরঙ্গ ঝিম মেরে থাকা এখানকার পরিবেশ ও প্রকৃতি । মানুষের হাঁটা চলার শব্দ বুঝি শোনা যায় না। আমার ইচ্ছে করে এই নির্জনতার মধ্যে , তোকে নিয়ে বসে গল্প করবো অনেক অনেকক্ষণ। কিন্তু তুই যে ছটফট করিস। ধীর-স্হির হলে অন্য কথা ছিল। আমি এখানে চমৎকার আছি।
তুই জানিস, আমি সবসময়ই সবকিছু নিজের মতো করে গুছিয়ে নিয়ে থাকতে পছন্দ করি। এখানে প্রায় সবকিছু গোছানো। ব্যক্তিগত কাজ বাদে নিজের হাতে কিছু করতে হয় না।
মাথার কাছের টেবিলে কুতুব তোর একখানা বাঁধানো ফটো রেখে গেছে। আমি সবসময়ই দেখতে পাই। ফুলদানি চমৎকার রঙের ফুল দিয়ে সাজানো। নীচের ফুলের দোকানে কুতুব বলে রেখেছে,ওরাই আমাকে নিয়মিত ফুল দিয়ে যায়। কাউকে বলিসনে কথাটা, কুতুবকে লুকিয়ে তোর গায়ের একটা জামা আমি এনেছিলাম । রাত্রিতে বিছানায় নিয়ে শুয়ে থাকি। তোর স্পর্শ গন্ধ পাই।
জীবন সম্বন্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই বাবা। আমি জীবনে যা-যা চেয়েছিলাম, তেমন করেই সব পেয়েছি। তোকে পেয়ে আমি আরো সম্পূর্ণ। আল্লাহর অশেষ কৃপা। না পাওয়ার জ্বালা বা ব্যর্থতা আমি জানতে চাই না আর। আসছে রোববার তুই আসবি।
তোকে বলার জন্য সাহসী রাজ পুত্তুরের অনেক গল্প, ছড়া জমা রেখেছি মনে ।”ফি ফাই ফো ফান আই স্মেল, দি ব্লাড অফ এ ব্রিটিশ ম্যান”, “টুইংকিল টুইংকিল লিটিল স্টার, হাউ আই ওয়ান্ডার হোয়াট ইউ আর” মনে আছে তো ছড়াগুলো? “ইউ আর সো বিউটিফুল মাই মাম” গানটি শুনতে চাই কিন্তু। কোনো অজুহাত না। মুখোমুখি বসে গাইবি।
যে মা এমনি করে ভালোবাসতে জানে,তোকে দূরে রেখে,চোখে না দেখতে পেয়ে, আমার অন্তরে যন্ত্রণার কষ্ট যে কতখানি ,একমাত্র আমিই জানছি।
আমাকে কেউ বোঝেনি। আমার মা, বাবা বোঝেনি। যে বয়সে বাচ্চারা ছুটোছুটি হুটোপাটা করে। তোকে দেখে দেখে এইসব ভাবি, আর আট বছর পরে,,, তখন কতই বা তোর বয়স হবে ? কিইবা বুদ্ধির পরিপক্কতা? জগত সংসার সম্পর্কে ধারণা কতটুকু হবে ? চৌদ্দ বছর বয়সের তুই যদি কোনো ভুল করে বসিস। আমি কি ফেলে দেব না শাস্তি দেব?একটা ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে আমি কি হাজারটা অন্যায়ের জন্ম দেব?এই সব উড়ো ভাবনা আমার মনের কার্নিশে ভর করে।
এই বয়সের একটা ভুল, আমার গোটা জীবনটাকেই লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে। অজ্ঞাত কারণে মানুষকে অনেক কিছু হারাতে হয়। অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাই না।
কি এক মোহজাল বিস্তার করে মনের ভেতরে। কোনো এক হিংস্র শ্বাপদ সংকুল বনে, ঘুমের ঘোরে চলে গেছলাম। ঘোর নয়তো কি সেটা ? ঘোর থেকে উদ্ধার করলো কুতুব।
ভালোবাসা কি দোষের? আমার মধ্যে কি ভালোবাসার কিছু ছিল না? আমি কোনোদিক থেকে কারোর কম নই, বেশী ছাড়া।অথচ ক্ষতি হয়ে গেল আমার বেশী। আমি কখনোই কারোর কোনো ক্ষতি করিনি। তোর বাপি(Dady) কুতুব তার সাক্ষী। তবে আল্লাহ পাকের কেন অপছন্দের হলাম আমি? আমাকে নিয়ে বিধাতা এই খেলা কেন খেললো? সে কিসের প্রতিশোধ নেয়? একটা প্রচন্ড পরিহাসে আমাকে তোর কাছ থেকে কেন দূরে দূরে রাখে? কেন আমায় দিনের পরে দিন মাত্র তিন মাসের দুধের শিশু ফেলে, একটু শ্বাস নিতে, একটু বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকার জন্য, বারবার এক থেকে আরেক হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করে কাটাতে হয় ?
আমি কখনোই সহজ ছিলাম না। নিজেকে কখনও সহজ সস্তা ভাবিনা। ওতে আমার বড্ড ঘেন্না। তোর ভাগ্যই বটে, এমন মায়ের গর্ভে এলি। আবার দূর্ভাগ্য , আমি তোর জন্য সেইভাবে কোনো কিছুই করতে পারিনা। বুকের একটু উষ্ণতা, একটু যত্ন – আত্তি, কিছুই না, সব দায়িত্ব পালনে অক্ষম মা।
বাবন, আজকে কিন্তু বেশ লাগছে মনে । ঠান্ডাটা প্রবল, হু হু করে একটা হাওয়া দিচ্ছিল কনকনে। অথচ দমকা বাতাসে খুশির ঘ্রাণ। প্রচন্ড অসুস্থ দেহ ও প্রানের মধ্যে শিহরিত আলোকিত আনন্দের দ্বিগবিদিক তরঙ্গ। তিন দিন বাদে রোববার, তাই!
এখন এপ্রিল মাস। এ জায়গাটা খুব আশ্চর্য জায়গা। শীত থাকবে বহুদিন। ক্যাফে থেকে বড়ো কাপে করে ডাবল কফি নিয়ে এসেছি।ঘরের রুম হিটারে গরম উত্তাপ।বাইরের ঠান্ডা নেই , এ পর্যন্তই। কফি খেতে খেতে তোকে লিখছি। তুই কেমন আছিস? আমি কাছে নেই, তোর কি খুব খারাপ লাগে ? মানিয়ে নিস। আস্তে আস্তে ঠিক হবে। নইলে মানিয়ে থাকবি আমার মতো । আমার এ ছাড়া অন্য কিছু বলার নেই।
আমাদের প্রত্যেককেই জীবনে এমন কতকগুলি সংকটে পড়তে হয়, যেসব সংকটে অন্য কেউই কোনরকম সাহায্য করতে পারে না। আমার বয়স হচ্ছে। জীবনের অভিজ্ঞতা আরও স্বচ্ছ হয়েছে।কুতুব আমাকে যা দিয়েছে বা দিতে পেরেছে অন্য কেউই তা দিতে পারে নাই বা পারতো কি না সন্দেহ। সে অকৃপণ উদার ভাবে আমাকে সব দিয়েছে। সারা জনমেও এমন পাওয়া সকলের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। আমি বড়ই ভাগ্যবতী। প্রেমের সবচেয়ে বড়ো গৌরব প্রেমই। প্রেমাস্পদকে পাওয়া না পাওয়ার মধ্যে না। তুই বুঝতে শিখলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবি, যে আমার জীবনে কুতুব একজন এবং একমাত্র কুতুবই ছিল। কুতুব আমার অজান্তেই কখন যে আমার কৃপণ মনের মৃত অনুভূতিকে জাগিয়ে এতো উদার ও উন্মুক্ত করে তুলেছে।সে অসাধারণ। তার ভালোবাসা সার্থক। আমার এখন বাঁচতে সাধ হয় হাজারটা বছর।
আর লেখার অবকাশ নেই। সময় হয়েছে নীচে যাওয়ার। কফি শেষ করতে যেটুকু সময় নেবো । এখুনি ছুটতে হবে আমায় । তিন দিন বাদে রোববার। আমাদের দেখা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ। সবাই মিলে অনেক মজা করবো। ভালো থাকিস।