তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনায় হাসপাতালের তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয় বাদ দিয়ে দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে।
উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞার স্বাক্ষরিত নতুন নির্দেশনাটি জারি করা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) অংশটি বাদ নিয়ে সংশোধিত নির্দেশনা সরকারি সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ‘সরকারি হাসপাতালের দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা’ শিরোনামের চিঠিতে ৬ নম্বর নির্দেশনায় বলা হয়- গবেষণা, জরিপ অন্য কোনো তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। সংগৃহীত তথ্য বা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের ভেতরে রোগী বা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের কোনো স্থির চিত্র বা ভিডিও ধারণ করতে পারবেন না। সংগৃহীত তথ্য প্রকাশের আগেই বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বলা হয়, এ নির্দেশনা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বিঘ্নিত করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনাকে দুর্নীতি সহায়ক দাবি করে মঙ্গলবার তা প্রত্যাহারের দাবি জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এরপরই সংশোধিত নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
সেখানে ৬ নম্বর ক্রমিকে থাকা আগের নির্দেশনা বাদ দেয়া হয়, পরিবর্তে নতুন যুক্ত করা হয়- কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দর্শনার্থী বা ব্যক্তি হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে নির্দেশনার অন্য বিষয়গুলো আগের মতোই আছে।
সংশোধিত নির্দেশনাটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পরিচালক, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্মতি ছাড়া কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না এমন নির্দেশনা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম গতকাল জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘যে কোনো তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। তথ্য সংগ্রহে বাধা নেই। এটা তো সাংবাদিকতার নীতি যে, যার সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি, সেই বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলে ক্রস চেক করে নিতে হয়, তার বক্তব্য নিতে হয়। সেটাই আমরা বলেছি।’
বলা হচ্ছে সম্মতি ছাড়া তথ্য প্রকাশ করা যাবে না- তখন সচিব বলেন, ‘না, ঠিক সম্মতি নয়। যাচাই বা মতামত নেয়া হবে, এমন বিষয়। সম্মতি শব্দটা হয়তো ঠিক হয়নি।’