ইরাকের রাজধানী বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে অন্তত তিনটি রকেট হামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি রকেট দূতাবাসের ক্যাফেটরিয়াতে এবং বাকি দুটি একটু দূরে আঘাত করেছে বলে জানিয়েছে এএফপি। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এ রকেটগুলো আঘাত হানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুরক্ষিত গ্রিন জোন এলাকায় পাঁচটি রকেট আঘাত হানে। এর মধ্যে তিনটি সরাসরি মার্কিন দূতাবাসে আঘাত হানে। এতে অন্তত তিন ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রথম কোন রকেট হামলায় বাগদাদে কোন মার্কিন দূতাবাস কর্মী আহত হলেন।
এখনো পর্যন্ত এ হামলার দায় স্বীকার করেনি কেউ। তবে ইরাকের সামরিক বাহিনীর ইরান-সমর্থিত অংশের বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযোগ জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন,‘এ ধরনের ধারাবাহিক হামলার ফলে ইরাক আবার যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।’
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে,‘আমাদের কূটনৈতিক সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা ইরাকি কর্তৃপক্ষের রয়েছে,তাদের তা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’
বিবিসি বলছে,সাম্প্রতিক সময়ে ইরাকে দূতাবাস এবং ইরাকি সামরিক ঘাঁটিগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে,বিশেষ করে যেখানে মার্কিন বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতির কারণে ইরাকে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এ মাসের শুরুতে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় ইরানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার ঘটনা এর মধ্যে অন্যতম।
জেনারেল সোলেইমানি নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের সামনে দুই দফায় রকেট হামলা হয়। মার্কিন হামলায় নিহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন আবু মাহদি আল-মুহানদিস,যিনি ইরান সমর্থিত কাটাইব হেযবোল্লাহ মিলিশিয়া বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন।
ইরাকি প্রভাবশালী শিয়া নেতা মোক্তাদা আল-সদর দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন।তাদের দাবি, মার্কিন বাহিনীকে ইরাক ছাড়তে হবে।
সোলেইমানি নিহত হওয়ার আগে সদরের সমর্থকরা ইরাকে ব্যাপক সরকার বিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে, কিন্তু সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর সেই বিক্ষোভ এখন মার্কিন বাহিনীর ইরাক ছাড়ার দাবি তুলেছে।