বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা-বিটিআরসির পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন।
রোববার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে বিটিআরসিতে গিয়ে ১ হাজার কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করে গ্রামীণফোনের হেড অব রেগুলেটরি সাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
আপিল বিভাগ সোমবারের মধ্যে বিটিআরসিকে ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। গ্রামীণফোনের করা রিভিউ আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার অর্থ পরিশোধের এ আদেশ দেন।
ওইদিন আদালত বলেছেন, গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা দিতেই হবে। এ বিষয়ে সোমবার পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে।
আপিল বিভাগের আদেশের একদিন পর শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে দেশের শীর্ষ এই মোবাইলফোন অপারেটরটি। বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের আইনি পদ্ধতিকে সম্মান করে। তবে বিটিআরসি গ্রামীণফোনের ওপর যে চাপ প্রয়োগ করেছে, সে বিষয়ে আদালতের সুরক্ষা প্রত্যাশা করছে তারা।
আপিল বিভাগ গত ২৪ নভেম্বর গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে জন্য তাদের দেয়া হয়েছিল তিন মাস সময়, যা সোমবার শেষ হচ্ছে। তার আগেই আদালতের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিল গ্রামীণফোন।
প্রসঙ্গত, বিটিআরসি বলে আসছে- গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার পাশাপাশি রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে বিটিআরসি লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে দুই অপারেটরকে নোটিশ পাঠায়।
বিটিআরসি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় দুই অপারেটর আদালতের দ্বারস্থ হয়। পরে অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হলেও তাতে সফলতা আসেনি।
গ্রামীণফোনের আবেদনে গত বছরের ১৭ অক্টোবর বিটিআরসির নিরীক্ষা আপত্তি দাবির নোটিশের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ ২৪ নভেম্বর গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশ দেন।
ওই আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য ২৬ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টে আবেদন (রিভিউ) করে গ্রামীণফোন, যার ওপর শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের জন্য সোমবার পর্যন্ত সময় দেন।
সুত্রঃ যুগান্তর।