বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে ও সরকার ঘোষিত বর্ধিত ছুটি উদযাপনের জন্য অনেকেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। এটি কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের সার্বিক কল্যাণের জন্য যে সকল নির্দেশনা দিয়েছেন, তা সকলকে যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সকল পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়ে আইজিপি বলেন, সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত যেন কোনোভাবেই ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে কেউ যেতে না পারে। একইভাবে প্রতিটি জেলা ও মহানগরীও জনস্বার্থে কঠোরভাবে এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে।
শপিংমল ও মার্কেটসমূহ যেন যথাযথ নিয়ম-কানুন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা হয়, সেটি নিশ্চিত করতেও বলেন তিনি। সকল ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।
রোববার (১৭ মে) সকাল ১১টা হতে দুপুর ১.৩০ পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী মাঠ পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)।
বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয় ওই অনলাইন সভায়।
জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে পুলিশের যে সকল দেশপ্রেমিক বীর সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন, তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ও তাদের মহান আত্মত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আলোচনা শুরু করেন আইজিপি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে হাসি মুখে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। অনেক সদস্য ইতোমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত দেশপ্রেমিক এ ত্যাগী পুলিশ সদস্যদের সুচিকিৎসা ও কল্যাণের জন্য সম্ভবপর সকল উদ্যোগের কথা তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাফল্য দেখিয়েছে- এমন সব দেশের পলিসি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পলিসিসহ বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনার আলোকে পুলিশ সদস্যের জন্য একটি অত্যন্ত আধুনিক এসওপি (স্ট্যান্ডিং অপারেটিং প্রসেডিওর) তৈরি করে সেটি সকল ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে। সেটি যথাযথভাবে অনুসরণের নির্দেশনা দেন আইজিপি।
দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের যথাযথভাবে নিজ সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শও দেন তিনি।
আইজিপি আরও বলেন, দেশ ও মানুষের সেবা একটি বিরল সুযোগ। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থায়ীভাবে আসন করে নিতে আহবান জানান তিনি। পাশাপাশি, জনসেবার এ অভূতপূর্ব ধারা অব্যাহত রাখারও আহবান জানান।
যে কোনো প্রকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, সব ধরনের পুলিশি সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু করা হবে। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক আইন-শৃঙ্খলা কার্যক্রমকে অধিকতর বেগবান ও ফলপ্রসূ করতে পর্যায়ক্রমে সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক পুলিশ কর্মকর্তা মনোনীত করা হবে। এতে, পুলিশের কাজের অধিকতর জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে।
পরিশেষে আইজিপি বলেন, পুলিশকে বর্তমানের মতো করে, সবসময় দাঁড়াতে হবে মানুষের পাশে।