পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-আইএসের দায় স্বীকারকে স্বাভাবিক ঘটনা মনে করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সুযোগ পেলেই তারা ক্রেডিট নেয় বলে মনে করেন মন্ত্রী। এই ঘটনার সঙ্গে আইএস বা জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান তিনি।
বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটা হাঁচি দিলেও আইএস দায় স্বীকার করে। এগুলো কোনো আইএস টাইএস না। আইএস কি দল বেঁধে ডাকাতি করতে যায়? যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা আসলে ডাকাতি করতে রেডি হচ্ছিল। … আইএস টাইএস না। সুযোগ পাইলেই তারা এসব কৃতিত্ব নেবার চেষ্টা করে। আগেও করত এখনো করছে। আমাদের দেশে কিছু হলেই তারা এসব করে।’
বুধবার সকালে থানায় বোমা বিস্ফোরণের পর রাতেই আইএস দায় স্বীকার করে। অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ তাদের ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানিয়েছে।
সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপের পরিচালক রিটা কাটজ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পুলিশের একটি দপ্তরে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। ২০১৯ সালের আগস্টের পর রাজধানী ঢাকায় আইএসের এটাই প্রথম হামলা বলে জানিয়েছেন রিটা। তিনি বলেছেন, কোরবানির ঈদের আগে নতুন লড়াইয়ের অংশ হিসেবে ঢাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করছে আইএস।
এর আগে দেশজুড়ে জঙ্গি সংগঠন আইএসের আদলে গঠিত নব্য জেএমবির সদস্যরা হত্যাকাণ্ড, নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশের সব ইউনিটকে সতর্কের পাশাপাশি দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ সদরদপ্তর। চিঠিতে থানাগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা বাড়াতে বলা হয়। পাশাপাশি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ জঙ্গিসংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল।
এই চিঠির চার দিনের মাথায় থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। এদিকে থানায় বোমা বিস্ফোরণে আহত পাঁচজনের মধ্যে রয়েছে- পরিদর্শক ইমরান, উপপরিদর্শক (এসআই) সজিব, পিএসআই অংকুর, পিএসআই রোমিও এবং রিয়াজ। পুলিশ বলছে, মিরপুর এলাকার একজন রাজনৈতিক নেতাকে খুন করার জন্য কয়েকজনকে ভাড়া করা হয়েছে। এমন খবরে পুলিশ তাদের ধরতে কয়েকদিন নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছিল। আজ ভোরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও কিছু মালামাল জব্দ করা হয়। সেগুলো থানায় নিয়ে আসা হয় এবং ওসি অপারেশনের কক্ষে রাখা হয়। সেখানে বিস্ফোরক কিছু থাকতে পারে এমন সন্দেহে বিশেষজ্ঞ দলকে তলব করা হলেও তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সেটি বিস্ফোরিত হয়।
ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের চারজন সদস্য ও একজন সাধারণ মানুষ আহত হন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার কারো ‘জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা’ পাওয়া যায়নি। তবে তারা মিরপুরের স্থানীয় সন্ত্রাসী।