স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন- সারা বিশ্বে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাশিয়া ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি দেশ আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে। তবে আমাদের দেশের জন্য ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে কি না, জানি না। আমার মতে, এমনিতেই বাংলাদেশ থেকে চলে যাবে কোভিড-১৯।
আজ শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস মিলনায়তনে শোক দিবসের আলোচনায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি খুবই আনন্দিত, দেশে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার কমছে। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা বাসায় বসেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ কারণে হাসপাতালেও ভিড় নেই। আসন ফাঁকা, কিন্তু রোগী নেই। সময় মতো ভাইরাসটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারায় করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে।
শনিবার ( ১৫ আগস্ট) বিকালে মহাখালীতে অবস্থা বিসিপিএস অডিটোরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন তৈরিতে অনেক দূর এগিয়েছে। যারা ভ্যাকসিন তৈরি করছে তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে, ভ্যাকসিন আনার চেষ্টায় আছি। আগামী পরশু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে, সেখানে ভ্যাকসিনসহ অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে কোভিড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে গেছে, মৃত্যুর হারও কমে গেছে। সুস্থতা বেড়ে গেছে। বেশিদিন লাগবে না বাংলাদেশ থেকে কোভিড চলে যাবে, ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে কিনা জানি না। তারপরও সব প্রস্তুতি আমরা রেখেছি, ভ্যাকসিনের প্রস্তুতিও আমরা রেখেছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা এমনি একটি ভাইরাস যা সম্পর্কে পৃথিবীর কারও কোনও ধারণা বা অভিজ্ঞতা ছিল না। কিভাবে একে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তাও আমাদের কারও জানা ছিল না। তবে আজ আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি, করোনাতে মৃত্যুর হার জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম। আমাদের সুস্থতার হার অনেক ভালো, ৬০ শতাংশের বেশি। সংক্রমণের হার কমে আসছে। অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু সেটা এখন আবার ঘুরছে।
তিনি বলেন, আজ মানুষের মনে সাহস এসেছে, এর কারণ মৃত্যুর হার কমে যাওয়া, হাসপাতালের ৭০ শতাংশ বেড খালি। হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় কেউ পড়ে থাকেনি। এসব কারণে মানুষ বাইরে যেতে সাহস করে। এখন তারা আর ভয় পায় না, কারণ তারা জানে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অর্জন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীরা বাড়ি থেকে চিকিৎসা পাচ্ছে, তাই হাসপাতালে আসার প্রয়োজন হয় না। এই সফলতাকে খাটো করে দেখার কোনও সুযোগ নাই। সবাই সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু কাজ করা আর সমালোচনা করা এক নয়, আমরা কাজে বিশ্বাসী। সমালোচকরা তাদের কাজ করবে, আমরা কাজ করে যাবো।
আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাচিপ ( স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ) এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলনাসহ অন্যরা।