1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
স্কুলে কোটায় ভর্তি হতে পারবে না মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা পদত্যাগ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার বিএনপির কমিটিতে ‘আ.লীগ-সংশ্লিষ্টদের’ নাম, তৃণমূলে ক্ষোভ বাকেরগঞ্জের গরু চোরের মাস্টারমাইন্ড মজনু ডিবির হাতে গ্রেফতার যুবদল নেতার উপর হামলার ঘটনায় বিএনপির সভাপতিসহ ১৬ জনকে আসামী করে মামলা!  সিরাজদিখানে সরকারী রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ! পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন কর্মস্থলে যোগ না দেয়া পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু: ডিএমপি কমিশনার মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ৮৫ বাংলাদেশি, গেল ১২৩ বিজিপি-সেনা সদস্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নূর

অবশেষে দেশে ফিরলেন সেই রায়হান

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০
  • ৫৫০ বার

অবশেষে দেশে ফিরলেন মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি তরুণ রায়হান কবির। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের এমএইচ-১৯৬ ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।

বিমানবন্দরে প্রিয় ছেলেকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় ছিলাম কবে আমাদের রায়হান আমাদের কাছে আসবে। আজ রায়হান এসেছে। আমরা ঈদের চাঁদ হাতে পেয়েছি। এই আনন্দ বুঝিয়ে বলতে পারব না।’

কেমন লাগছে-জানতে চাইলে রায়হান কবির বলেন, ‘এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। গত ছয় বছরে কতবার যাওয়া-আসা করেছি। এবার অন্যরকম অনুভূতি। আমার বাংলাদেশ। আমার মাটি। আমার বাবা-মা। এই আনন্দ কাউকে বলে বোঝাতে পারব না। আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। দেশে-বিদেশে-প্রবাসে যারা পাশে ছিলেন, সবার কাছে কৃতজ্ঞতা।’

রায়হানের আইনজীবী সুমিতা শান্তিনি কিষনা জানান, শুক্রবার রাতে পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন অফিস থেকে রায়হানকে সরাসরি বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সব প্রক্রিয়া শেষ করে মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় রাত ১১টায় তাকে বিমানে তোলা হয়।

এর আগে করোনার পরীক্ষায় তার নেগেটিভ প্রতিবেদন আসে। যেহেতু রায়হানের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া পুলিশ কোনো অভিযোগ আনেনি, কাজেই তাকে কোনো আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে না বলে জানান সুমিতা শান্তিনি কিষনা।

করোনা মহামারি চলাকালে অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের আচরণ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায়, গত ২৪ জুলাই রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৪ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর ৬ আগস্ট পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে। পুলিশ ১৪ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ১৩ দিন মঞ্জুর করেন।

বুধবার রিমান্ড শেষ হওয়ার পর পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। এরপরেই ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তায় তার বিমানের টিকিট করা হয়। শুক্রবার সকালে রায়হানকে জানানো হয়, রাতেই তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর আগেই রায়হানের লাগেজসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সেখানে আনা হয়।

গত ৩ জুলাই আল-জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণের বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে দেখানো হয়েছে, কর্মহীন ও খাবারের সংকটে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আল-জাজিরার ওই প্রামাণ্য প্রতিবেদনে মহামারি চলাকালে অভিবাসীদের আটক ও জেলে পাঠানোর মাধ্যমে মালয়েশিয়া সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে বক্তব্য দেন রায়হান কবির। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ার পুলিশ তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে। ২৪ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের ২১টি সংগঠনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানায় এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করে।

রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার ও হয়রানির নিন্দা জানিয়েছিল মালয়েশিয়ার আইনজীবীদের সংগঠন ল’ ইয়ারস ফর লিবার্টি-এলএফএল। তারা বলেছে, রায়হানের বিপক্ষে যেভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিপীড়নমূলক। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে রায়হানের বক্তব্যটি তারা দেখেছেন। সেখানে খুব সূক্ষ্মভাবে বিচার করলেও মালয়েশিয়ার আইনের কোনোরকম লঙ্ঘন ঘটেনি। এখানে কেবল অভিবাসীদের ওপর দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে তার হতাশার কথা ব্যক্ত করেছিলেন রায়হান।

গ্রেপ্তারের আগে রায়হান এক বার্তায় বলেন, ‘আমার অপরাধটা কী? আমি তো কোনো মিথ্যা বলিনি। প্রবাসীদের ওপর যে বৈষম্য ও নিপীড়ন চলেছে, আমি শুধু সেই কথাগুলো বলেছি। আমি চাই প্রবাসে থাকা কোটি বাংলাদেশি ভালো থাকুক। আমি চাই পুরো বাংলাদেশ আমার পাশে থাকুক।’

পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান বারবার বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালে প্রবাসীদের প্রতি যে আচরণ তিনি দেখেছেন, সেটাই তিনি বলেছেন এবং এগুলো তার একান্তই নিজস্ব অনুভূতি। তবে মালয়েশিয়ার কাউকে তিনি আহত করতে চাননি।

রায়হানের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে। বাবা-মা আর দুই ভাই-বোনের পরিবার। স্থানীয়রা বলছেন, বন্দরে নিজ এলাকাতেও সবার কাছে প্রতিবাদী তরুণ হিসেবে পরিচিত রায়হান। এলাকার সবার বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন। নিজের বই, টাকা দিয়ে সাহায্য করতেন শিক্ষার্থীদের। এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে দারুণ সোচ্চার ছিলেন তিনি। সবার বিপদে পাশে থাকতেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ