সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাহাত খান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি ডায়বেটিকসসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। পারিবারিক সুত্রে জানাগেছে,শুক্রবার (২৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
শনিবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সকাল ১১টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। রাতে তার লাশ বারডেমের হিমাগারে রাখা হবে।
এর আগে গত ২০ জুলাই রাহাত খানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগের দিন বাসায় খাট থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ব্যথা পান তিনি। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে এক্সরে করা হলে তার পাঁজরে গভীর ক্ষত ধরা পড়ে। এর পাশাপাশি তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে তাকে বারডেম হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি, ডায়বেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। এ কারণে তার চিকিৎসার প্রক্রিয়া জটিল হয়ে পড়ায় সার্জারি করা যাচ্ছিল না বলে বাসাতেই অবস্থান করছিলেন তিনি।
রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা এর আগে গনমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন,চিকিৎসকরা ২৯ জুলাই আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন— হাসপাতালে থেকে কোনও লাভ হবে না। ডায়বেটিস, কিডনি, হার্টে সমস্যা থাকার কারণে কোনও সার্জারি করা যাবে না। এজন্য বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকতে হয় রাহাত খানকে।
রাহাত খান বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান কথাশিল্পী। ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামের খান পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। ছোটগল্প ও উপন্যাস উভয় শাখাতেই তার অবদান উল্লেখযোগ্য। সাংবাদিক হিসেবেও রাহাত খানের অবদান উল্লেখযোগ্য। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় তিনি ষাটের দশক থেকে কর্মরত। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। বিখ্যাত মাসুদ রানা সিরিজের রাহাত খান চরিত্রটি তার অনুসরণেই তৈরি করা। তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২), ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক (১৯৯৬) পেয়েছেন।