নারায়ণগঞ্জের তল্লায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদটি রাজউকের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো কিনা এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিকঠাক ছিলো কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মসজিদের ঘটনাটা কেন ঘটল সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে নিশ্চয়ই সেটা বের হবে।
এরআগে বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশন শুরু হয়। করোনা মহামারী পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই অধিবেশন চলবে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও দুই শিশু রয়েছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল এ কথা জানান।
তিনি বলেন, মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন- মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে জুনায়েদ (১৭), দুই ভাই জোবায়ের (১৮) ও সাব্বির (২১), মুন্সিগঞ্জের কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), চাঁদপুরের মোস্তফা কামাল (৩৪), পটুয়াখালীর গার্মেন্টস কর্মী রাশেদ (৩০), নারায়ণগঞ্জের হুমায়ুন কবির (৭২), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর জামাল আবেদিন (৪০), গার্মেন্টস কর্মী ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), নারায়ণগঞ্জের কলেজ শিক্ষার্থী মো. রিফাত (১৮), চাঁদপুরের মাইনুউদ্দিন (১২), ফতুল্লার জয়নাল (৩৮), লালমনিরহাটের গার্মেন্টসকর্মী নয়ন (২৭), নিজাম (৩৪), নারায়ণগঞ্জের রাসেল (৩৪), খুলনার কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), শিশু জুবায়ের (৭), বাহার উদ্দিন (৫৫), নাদিম (৪৫), মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫), শামীম (৪৫) ও জুলহাস। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা তল্লা এলাকার বাসিন্দা।
শুক্রবার রাতে এশার নামাজের সময় তল্লায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৪০ জনের বেশি মুসল্লি দগ্ধ হন। দগ্ধদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে। জানালার কাচ উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মসজিদের নিচ দিয়ে যাওয়া তিতাস গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এ বিস্ফোরণ হতে পারে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। বিষয়টি তদন্তে জেলা প্রশাসন ও তিতাস কর্তৃপক্ষ কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।