কাশ্মীরে ব্যবসায় সবকিছু হারিয়ে ১ কোটি ১৭ লাখ ৮ হাজার ৩৭৩ টাকায় (১ লাখ ২০ হাজার ডলার) নিজের কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছেন আহমেদ খান (২৮) নামের এক ব্যক্তি। অর্থ সহায়তার সমস্ত বিকল্প পথ শেষ হওয়ায় তিনি জানান, কিডনি বিক্রির চেষ্টা করা ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই।
গত সোমবার শ্রীনগরভিত্তিক কাশ্মীর রিডার পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন আহমেদ খান। সেখানে লেখা ছিল, ‘আমার কিডনি বিক্রি করতে চাই। কারণ আমি ব্যবসায় সমস্ত কিছু হারিয়েছি। ফলে আমি এখনো ৯০ লাখ রুপি পরিশোধ করতে পারিনি। কিডনির প্রয়োজনে যে কাউকে আমার সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করছি। যদিও ভারতের নয়াদিল্লির শাসিত বিতর্কিত এই অঞ্চলটির কিডনি বিক্রি করার কাজটি অবৈধ।’ এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন সাড়া দেয়।
গতকাল মঙ্গলবার আহমেদ আরব নিউজকে বলেন, ‘আপনি যখন কোনো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, তখন আপনি এ রকম বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে পারেন।’ বিজ্ঞাপনটি প্রচার করায় কাশ্মীর রিডার পরিচালনার বিজ্ঞাপন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ও সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন।
দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার কাজীগুন্ড এলাকার নুসু গ্রামে বসবাস করেন আহমেদ খান। তিনি জানান, এক দশক ধরে চুক্তি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাজটি ইতিমধ্যে ধীর গতিতে চলছিল। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, ভারত সরকার এই অঞ্চলের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদাকে প্রত্যাখ্যান করে। এ কারণে কাশ্মীর এক বছর ধরে বন্ধের ফলে তিনি অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে মোড় নিয়েছিল। এরপরে তিনি আর্থিকভাবে সমস্যায় এবং ব্যবসায় ক্ষতির মধ্যে পড়েছি।
আহমেদ খান বলেন, ‘কাশ্মীর এক বছর বন্ধ না রাখলে আমি এই সমস্যার মুখোমুখি হতাম না। আমি কিছু করতাম।’
আর্থিক সংকটে ভোগা আহমেদ খান বলেন, ‘ভারতের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পরে যে ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য সরকারের কাছ থেকে আমার ক্ষতিপূরণ দরকার।’
সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন পোস্ট করার আগে আহমেদ খান তার সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন নেতার কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো সাহায্যে পাননি।
বিজ্ঞাপনের সাড়া পাওয়া প্রসঙ্গে আহমেদ খান বলেন, ‘আমি পাঁচ থেকে ছয়জনের সাথে কথা বলেছি। তারা আমার সাথে দেখা করতে আসবে। তারা কিডনি কিনতে চান এবং আমাকে সহায়তা করতে চান।’ কিডনি বিক্রি করা টাকা দিয়ে ঋণদাতাদের ঋণ পরিশোধ করার পাশাপাশি পুনরায় ব্যবসা চালু করবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা নিয়ে সমালোচনার পর রিডার পত্রিকাটির সম্পাদক হায়াৎ ভাট আরব নিউজকে বলেন, ‘এটি একটি ভুল ছিল।’