প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের গ্রাউন্ড জিরো হিসেবে বাংলাদেশকে প্রায়ই উল্লেখ করা হয়। ইতোমধ্যে যে ক্ষতি হয়েছে, তার অভিযোজন ভবিষ্যতের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের প্রক্রিয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বৈশ্বিক আর্থিক ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে বিপর্যয়ের মাত্রার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষেত্রে অভিযোজন কার্যক্রম অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
সোমবার নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন সম্মেলন ২০২১- এ ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয়ভাবে অভিযোজনের পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৈশ্বিক নেতৃত্বের জায়গায় আবির্ভূত হয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ক্ষতি প্রশমনে অভিযোজনের যে সব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তাতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় ঘাটতি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রক্রিয়ার মতো গুরুত্ব দিয়ে এরইমধ্যে দেখা দেওয়া বিরূপ প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থায়ন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় বৈশ্বিক অভিযোজন পদক্ষেপসমূহ প্রয়োজনীয় গতি থেকে অনেক দূরে রয়েছে।
ঐক্যবদ্ধ হয়ে সময়োচিত পদক্ষেপ নেওয়া যে কতটা প্রয়োজন, তা কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় আমরা বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে আমরা এক কোটি ১৫ লাখ গাছের চারা লাগিয়েছি। এবং আমরা ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ নামে একটি কর্মসূচিও চালু করেছি।”
নিজেদের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার অর্থ ব্যয়ে ৭৮৯টি কর্মসূচি নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-সিভিএর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ। সাউথ এশিয়ান অফিস অব গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনও রয়েছে এখানে।
এই দুটি বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয়ভাবে অভিযোজনের যেসব পদক্ষেপ এসেছে সেগুলোকে আমরা এগিয়ে নিচ্ছি। এগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকিতে থাকা কমিউনিটিগুলোর জন্যও সমাধান নিয়ে আসতে পারে।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের আগে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট স্বাগতিক বক্তব্য দেন।
এই শীর্ষ সম্মেলনে বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় অংশীজনদের নিয়ে প্রথমবারের মতো একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে, যা বিশ্বকে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব সামলে নেওয়ার সক্ষমতা তৈরির পথে এগিয়ে নেবে।