করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান পরীক্ষার পর বাসাতেই তাকে চিকিৎসা করোনা হবে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের পরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরার পরে সাংবাদিকদেরকে এ কথা জানান তিনি।
জাহিদ হোসেন বলেন, অনেক অনেক ভালো উনার রিপোর্টটি। সাময়িক রিপোর্টে ফাইন্ডিংস আছে সেটাকে ক্লিনিক্যালি আমরা মনে করতে পারি যে এটি অত্যন্ত মিনিমাম। তার জন্য যে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন এখন তা বাসায় থেকেই দেয়া হবে। এক্ষেত্রে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানসহ বিদেশের চিকিৎসকদের আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান পরীক্ষার ফাইনাল রিপোর্ট শুক্রবার পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে পরীক্ষার জন্য রাত ৯টা ১৭ মিনিটে বেগম জিয়াকে নিয়ে একটি প্রাইভেটকার বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে যায়।
বিকালে ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের আজকে সেভেন ডে। কোভিডের পরিভাষায় ম্যাডাম এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে এন্ট্রি হচ্ছে। আমি আগেও বলেছি যে, কোভিডের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। কোভিডের যত সাবধানতা, যত জটিলতা সেগুলো সাধারণত সেকেন্ড উইকে হয়। সেজন্য আমরা আরেকটু সাবধানতা অবলম্বন করতে চাই।
নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে গত রোববার খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক একটি টিম চিকিৎসা শুরু চলছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত চিকিৎসক টিম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিয়েছে। নিয়মিতই তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মো. আল মামুন ফিরোজায় গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো মনিটরিং করেন এবং সেগুলোর রিপোর্ট চিকিৎসক টিমের প্রধানকে অবহিত করেন।
চিকিৎসক টিমের সদস্যরা জুমে বৈঠক করে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করেন। এসব বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও থাকেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও গুলশানে ফিরোজার বাসায় তার গৃহকর্মীসহ আরো ৮ জন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন বাড়ি চলে গেছেন এবং বাকীরা ফিরোজায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৫ বছল বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ মানবিক বিবেচনায়, শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন।