দেশের তিন বিভাগের ২৬ জেলায় চলা পেট্রল পাম্পের ধর্মঘট স্থগিত করেছেন আন্দোলনকারীরা। আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সঙ্গে পেট্রোল পাম্প মালিকদের এক আলোচনায় ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয় ৷
দেশের তিন বিভাগে ধর্মঘটে থাকা পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসেসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে জ্বালানি তেল আমদানি ও সরবরাহকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসির সমঝোতা বৈঠকের পর ধর্মঘট স্থগিতের এই ঘোষণা আসে।
এর আগে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় কারওয়ানবাজারে বিপিসির লিয়াজোঁ কার্যালয়ে কোম্পানির পরিচালক (বিপণন) সৈয়দ মেহদী হাসানের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হয়।
এর আগে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ১৫ দফা দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন। ধর্মঘটের কারণে স্বল্প ও দূরপাল্লার যানবাহন নিয়ে বেকায়দায় পড়েন চালকরা।
এই তিন বিভাগে প্রায় এক হাজার ৩০০ পেট্রলপাম্প একযোগে বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেইসঙ্গে ডিপো থেকে তেল উত্তোলনও বন্ধ ছিল।
তাদের ১৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জ্বালানি তেল বিক্রিতে কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ কমিশন দেওয়া, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান- বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের জন্য ৫ লাখ টাকার দুর্ঘটনা বীমা, ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণের নিয়ম বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেওয়ার নিয়ম বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট করা, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল করা, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জন্য ইজারা নেওয়ার নিয়ম বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নেওয়ার নিয়ম বাতিল, আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলকভাবে ক্যালিব্রেশনের নিয়ম বাতিল করা।
এছাড়া ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ছাড়া ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ করা, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানী তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু করা, পেট্রোল পাম্পের পাশে যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তিপত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা এবং বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করার দাবি করা হয়।