1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
চার দিনের সফরে চীনের পথে প্রধানমন্ত্রী বাকেরগঞ্জে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দিলেন আ’লীগ নেত্রী রাফির উপহার পেয়ে আবেগাপ্লুত তমা ক্ষুধা মেটেনি রিয়াল সভাপতির, নজর ১৬তম শিরোপায় আমরা দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের প্রস্তুতি নিচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ত্রাণ বিতরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মাহিকে দুটি গাড়ি ও ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আজিজ এমপি আনারের বিষয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৬ মাসে ১ দিন কিংবা সাপ্তাহে ১ দিন নয়,২৪ ঘন্টা আমি আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই-মঈনুল হাসান নাহিদ! সিরাজদিখানে ভাইস-চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম বাবুল এর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

একনেকে উঠছে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্প

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩
  • ৬৫ বার

সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম ইশতেহার পূরণের লক্ষ্যে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হচ্ছে বহুল আলোচিত ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্পটি।

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের ব্যাপক রূপান্তর এবং ২০৪১ সাল নাগাদ পল্লীবাসীর জীবনমান উন্নয়নে এটা হবে এক মহাপরিকল্পনার শুরু। এজন্য নির্বাচিত ১৫টি গ্রামে পাইপের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ, আবাসন সুবিধা ও কমিউনিটি স্পেস-সহ শহরের সব নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এর মধ্যে দিয়েই শুরু হতে চলেছে সরকারের উদ্যোগ ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। প্রাথমিকভাবে ১৫টি ইউনিয়নে পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় করবে সরকার। পর্যায়ক্রমে তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উঠছে একনেক সভায় উত্থাপন করা হবে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টানা দুই বছর নিবিড় সমীক্ষার পর প্রকল্প প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়। এলজিইজির কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালে টেকসইভাবে দেশের গ্রামগুলোতে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের একটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প নেওয়া হয় । কারিগরি সহায়তার প্রকল্পের আওতায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ সম্পর্কিত আটটি বিষয়ে সমীক্ষা করেছে।

সমীক্ষাগুলো হলো— গ্রামীণ যোগাযোগ, গ্রোথ সেন্টার ও হাটবাজার, গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, গ্রামীণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি স্পেস ও বিনোদন ব্যবস্থা, গ্রামীণ আবাসন, উপজেলা মাস্টার প্ল্যান এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি। এই আটটি বিষয়, একটি অন্যটির পরিপূরক। যেমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ হাট-বাজার, গ্রামীণ গৃহায়ন উপজেলা মাস্টার প্ল্যানের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতিটি গ্রামে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ মহাপরিকল্পনায় পর্যায়ক্রমে সরকারের অন্যান্য সংস্থাকে যুক্ত করা হবে জানান কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) একেএম ফজলুল হক জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে। এতে যে দিকনির্দেশনা থাকবে তার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হলে প্রতিটি গ্রামে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি বাড়বে। কারণ ২০৪১ সালের উন্নত দেশ হতে হলে গ্রাম-কেন্দ্রিক উন্নয়ন করতে হবে।

প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আগামী জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে তিন বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে এলজিইডি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ১৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৫৭ কিলোমিটার সড়ক, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ। ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হবে ২৩টি গ্রোথ সেন্টার। পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি টাকা। ২৭টি হাটবাজার স্থাপনে ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাঁচটি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হবে ৬২ কোটি টাকা। ২৩ কোটি টাকায় ১৪টি খাল ও পুকুর খনন করা হবে। খেলার মাঠ ও সবুজায়নে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। গ্রামের সড়কে বনায়নের জন্য রাখা হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর ৯৫০টি সড়কবাতির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে সাড়ে ৯ কোটি টাকা।

উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) তথ্যমতে, প্রাথমিকভাবে তিনটি গ্রামে ৬৮টি চারতলা আবাসন ভবন নির্মাণ করা হবে। জমির প্রকৃত মালিকদের মধ্যে যারা ১০ শতাংশ অগ্রিম অর্থ দেবেন তাদের কাছে ৬১৬টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হবে। বরাদ্দের বিষয়ে একটি সমীক্ষাও চালানো হয়েছে। জমির মালিকানার আলোকে ভবনের সামনে কৃষিকাজের জন্য জমি বরাদ্দ রাখা হবে। তবে কত কিস্তিতে কত টাকা জমা দিতে হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামতের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ আবাসন সুবিধা তৈরি করতে ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে ৫ হাজার ১০০ বেকার তরুণকে জীবনমান উন্নয়নে পেশাভিত্তিক হস্তশিল্প ও কৃষি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। গ্রামগুলোর ব্র্যান্ডিং করার জন্যও ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তাদের জন্য অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণে ২০ লাখ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

ডিপিপিতে এ বিষয়ে বলা হয়, শহরের সুবিধা গ্রামে ছড়িয়ে দিতে এলজিইডি ও ডিপিএইচ যৌথভাবে একটি কারিগরি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেটির আলোকে আটটি সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। আর এসব সুবিধা বাড়াতে ৩৬টি সমীক্ষা ও ৩০টি গাইডলাইন তৈরির জন্য তথ্য সংগ্রহের সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়। এসব নীতিমালা ও গাইডলাইন তৈরি এবং পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ১৫টি ইউনিয়নে পাইলট প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে আট বিভাগের আট ইউনিয়ন এবং বিশেষ এলাকা হিসেবে হাওর, পাহাড় ও চরাঞ্চল থেকে সাতটি ইউনিয়ন বাছাই করা হয়। এই গ্রামগুলো হলো – গোপালগঞ্জের বিলচান্দা, নরসিংদীর হফিজপুর, নেত্রকোনার ডেমুরা, কুমিল্লার শেকচাইল, চট্টগ্রামের চরশরত, রাঙ্গামাটির ছোট হরিণা, সিলেটের বাগাইয়া, সুনামগঞ্জের শিমুলবাঁক, নওগাঁর খোরদো চম্পা, রাজশাহীর সোনডাঙ্গা, কুড়িগ্রামের পাথরডুবি, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাতক্ষীরার দাতিনাখালী, খুলনার টিপনা এবং বরিশালের ইন্দুরিয়া।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান জানিয়েছেন, গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে না। একারণে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গ্রামে শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন করলেই হবে না। গ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও জোরদার করতে হবে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে বহুমুখী করতে হবে। কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, কৃষিকে আরও আধুনিকায়ন করা, কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে আসতে হবে। এটা করা হলে গ্রামে কর্মসংস্থান হবে। তাহলে যে গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সেগুলো ফলপ্রসূ হবে।

প্রকল্পটির বিষয়ে গত মে মাসে পরিকল্পনা কমিশনে মূল্যায়ন কমিটির সভা হয়। প্রকল্পটির মাধ্যমে জনগণকে কী কী সুবিধা দেয়া হবে তা সুস্পষ্টভাবে জানতে চাওয়া হয় সেখানে। একই সঙ্গে প্রতিটি গ্রামে ২৫ শতাংশ জায়গায় বনায়ন নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য আগে প্রকল্প এলাকার মাস্টারপ্ল্যান করার নির্দেশ দেয়া হয় ওই সভায়। এলজিইডি তখন জানায়, দ্রুতই এ বিষয়ে মাস্টারপ্ল্যান করা হবে।

বৈঠকে আরও জানতে চাওয়া হয়, ফ্ল্যাট নিতে কিস্তির পরিমাণ ও সরকারি কোষাগারে কত রাখা হবে? ফ্ল্যাট বণ্টন ও প্রশিক্ষণের বিষয়েও জানতে চায় কমিশন। এছাড়া প্রশিক্ষণ, জরিপ, ব্র্যান্ডিং, কম্পিউটারসামগ্রীসহ বেশকিছু খাতে বরাদ্দ কমাতেও নির্দেশ দেয়া হয়।

এ জাতীয় আরো সংবাদ