দেশের অব্যাহত উন্নয়নের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কোনো লুটেরা যাতে দেশকে ধ্বংস করার জন্য আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য বাংলাদেশের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।’
জোহানেসবার্গের র্যাডিসন ব্লু হোটেলে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে নৌকায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি আমরা আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। দেশকে লুটেরাদের হাতে ছেড়ে দেবেন না। অন্যথায় দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশের উন্নয়নের যাত্রা কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই অব্যাহত থাকবে, এটা নিশ্চিত করুন।’
দেশের উন্নয়নের গতি যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেজন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশবাসী নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়েছে। অথচ বিএনপিকে ভোট দিলে তারা লুটপাট, দুর্নীতি ও হত্যা করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করছি, তাদের দুঃসময়ে পাশে থাকি এবং তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছি। উল্টো বিএনপি-জামায়াত জোট মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতি করছে, টাকা কামাচ্ছে। দুর্নীতি, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, অর্থ পাচার, লুটপাট ও সারা দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এরই মধ্যে কিছু টাকা ফেরত এনেছে, যা খালেদা জিয়ার দুই ছেলে চুরি করে বিদেশে পাচার করেছিল এবং অবশিষ্ট টাকাও জব্দ করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবার বাড়াবাড়ি করলে দেশের মানুষ তাদের রেহাই দেবে না। বিএনপি-জামায়াত চক্র ২০১৩-১৫ সাল পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে ৫০০ মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিবাদের মুখে তারা অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে, তার ছেলে তারেক রহমান ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং তারেকের স্ত্রী দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। দণ্ডপ্রাপ্তরা বিএনপির শীর্ষ নেতা এবং তাদের সামনে রেখে রাজনীতি করছে। জনগণ তাদের ভোট দেবে না। জনগণ বিএনপিকে ক্ষমতায় আসার জন্য ভোট দেবে না। জনগণ অগ্নিসন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় আনবে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘একসময় বাংলাদেশকে দরিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তবে এখন তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিশ্ব বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে রূপান্তরিত করেছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।’
দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি জানান, তারা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বানও জানান তিনি। জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরির জন্য বিদেশে না যাওয়ার অনুরোধের পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কোনো গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ নিয়ে দেশে ফিরে প্রবাসীরা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে পারবেন। এ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাকরির জন্য বিদেশেও যেতে পারেন।’