ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আলোচনায় সেদেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশটির পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার বিকেল ৩ টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব বলেন।
তিনি বলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পার্লামেন্টে তার বক্তব্যের একপর্যায়ে আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের নাম উচ্চারণ করে শিষ্টাচারবহির্ভূত ভাবে সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন- বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে ব্যাপক হারে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে। নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ভারতে পালিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সাম্প্রদায়িক নিপীড়নকারী দল হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত আছেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
মির্জা ফখরুল বলেন, হিন্দুত্ববাদী ভারত প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও বিএনপির কাঁধে বন্দুক রেখে মিথ্যাচারের মাধ্যমে এ অঞ্চলের রাজনীতিকে একটি অসুস্থ পরিবেশের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এদেশের বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের কথা এড়িয়ে গিয়ে ইচ্ছা প্রণোদিতভাবে বিএনপির মতো একটি অতি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করায় এটি প্রমাণিত হয় যে, বর্তমান ভারত সরকার তার সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য বাংলাদেশের জনগণের পরিবর্তে নতজানু আওয়ামী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বেশি আগ্রহী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকারের সময় বরাবরই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন ছিল। এমনকি বাবরি মসজিদ সংকট এবং গুজরাট-দাঙ্গার সময়ও খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় ছিল। এককথায় বলতে গেলে, বিএনপির সব আমলেই তার সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সফল হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নাগরিক সংশোধনী আইনকে অগণতান্ত্রিক, বৈষম্যমূলক, অসাংবিধানিক ও মানবতাবিরোধী আখ্যায়িত করে সারা ভারতে এখন প্রতিবাদ চলছে। কোথাও কোথাও এই প্রতিবাদ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। কেবলমাত্র সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে টার্গেট করেই এ আইন প্রণীত হয়েছে বলে আজ জনমনে বিশ্বাস স্থাপিত হয়েছে। এমনকি ভারতের অমুসলিম সম্প্রদায়ের বিবেকবান মানুষও এই বৈষম্যমূলক আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করছে। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নির্ধারণের এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী সমালোচিত ও নিন্দিত হচ্ছে।