1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

নমুনার পাহাড়, হঠাৎ কমে গেছে পরীক্ষা

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০
  • ৬০৫ বার

চট্টগ্রামে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ৬৬ দিনে মোট রোগী ছিল চার হাজার ৬৮ জন। এরপর ৮ জুন থেকেই হঠাৎ করে এখানে নমুনা পরীক্ষা কমতে শুরু করেছে। ৭ জুন ৬১৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হলেও পরবর্তী তিন দিনে তা যথাক্রমে ৫৭৮, ৪৮৫ ও ৩৬৫-তে নেমে আসে। ১০ জুন ৩৬৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১০৮ জন শনাক্ত হয়।

চট্টগ্রামে গত ৩ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত ৩৬ দিনে তিন হাজার ৯৯০ জন আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রমণ হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকার মধ্যে নমুনা পরীক্ষা আরো বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। অথচ সেই সময়টা থেকে উল্টো এখানে করোনার নমুনা পরীক্ষা আরো কমতে শুরু করেছে।

এখানে করোনা পরীক্ষায় নিয়োজিত বিশেযজ্ঞরাই বলেছেন, চট্টগ্রামে দিন দিন যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে দৈনিক অন্তত পাঁচ হাজার নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। গত ১০ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে এক হাজার নমুনা সংগ্রহ হলেও পরীক্ষা হচ্ছে প্রায় অর্ধেক। দুই দিন আগে চট্টগ্রামের দুটি ল্যাব (চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও বিআইটিআইডি) থেকে প্রায় চার হাজার নমুনা ঢাকার একটি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। এর পরও ওই দুই ল্যাবে আরো হাজারো নমুনা পড়ে আছে। এর বাইরে প্রতিদিন জমছে ৪০০ থেকে ৫০০ নমুনা। অবস্থা এমন ভয়াবহ হয়ে ওঠার জন্য দায়ী মূলত অব্যবস্থাপনা। চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি অনেক হাসপাতাল-ল্যাব থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা হচ্ছে তিনটি ল্যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, নগরের বেসরকারি শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এক মাসের বেশি আগে সরকার থেকে অনুমোদন পেলেও তারা নমুনা পরীক্ষা শুরু করা নিয়ে এখনো গড়িমসি করছে। এ ছাড়া নগরের আরো কয়েকটি হাসপাতাল-ক্লিনিকে পরীক্ষার যন্ত্র থাকলেও তারা হাত গুটিয়ে বসে আছে। পরীক্ষাগার বাড়ানো নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় ল্যাব খুবই কম। আবার যেসব ল্যাব রয়েছে, তাতেও লোকবল সংকট। কেউ কেউ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বিআইটিআইডিতে এখনো তিনজন আক্রান্ত। পিসিআর মেশিনও কম। কিন্তু যেসব প্রতিষ্ঠানে এই যন্ত্র রয়েছে, সেখানেও পরীক্ষা করানো হচ্ছে না। তবে তাঁরা সরকার থেকে অনুমতিও চায়নি। ওই ল্যাবগুলো যদি এগিয়ে আসত অথবা ওই পরীক্ষার মেশিনগুলো যেখানে পরীক্ষা হচ্ছে সেখানে দিত, তাহলে পরীক্ষা আরো বাড়ত। করোনা পরীক্ষা নিয়ে সমন্বয়েরও অভাব রয়েছে।

হঠাৎ নমুনা পরীক্ষা কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী গতকাল শুক্রবার দুুপুরে বলেন, ওই তিন দিনের (৮-১০ জুন) চেয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষা বেড়েছে। এখন যে ব্যবস্থা রয়েছে তাতে আমরা দৈনিক এক হাজার নমুনা পরীক্ষা করতে পারব। তবে পরীক্ষা আরো বাড়াতে হবে। বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইম্পিরিয়াল হাসপাতালে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী ১৮ জুন শেভরনে পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ এবং বিআইটিআইডিতে আরো একটি করে পিসিআর মেশিন স্থাপনের কাজ চলছে। তখন পরীক্ষা আরো বাড়বে।

জানা যায়, চট্টগ্রামে করোনার নমুনা পরীক্ষার কিটেরও সংকট শুরু হয়েছে। এখানে করোনা পরীক্ষার প্রধান ল্যাব বিআইটিআইডিতে দুই থেকে তিন সপ্তাহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিবার চার হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার কিট সরবরাহ করা হতো। সর্বশেষ দুই দিন আগে এখানে এসেছে এক হাজার ৯২০টি কিট। একই অবস্থা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজেও। দুই দিন আগে এখানে যে কিট পাওয়া গেছে, তা দিয়ে সপ্তাহখানেক যেতে পারে। অন্তত ১২ থেকে ১৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার বিকল্প নেই। সে জন্য বাড়তি কিটও লাগবে। শুধু নমুনা সংগ্রহের জন্য বুথ বাড়ালে হবে না।

এ জাতীয় আরো সংবাদ