1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন

একজন ড্রাইভারের এত টাকা !

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৪৫৫ বার

শিরোনামটা পড়ে এতক্ষণে হয়তো আপনিও চমকে গেছেন। আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। তার কাজ কর্মকর্তার গাড়ি চালানো। কিন্তু গাড়ি চালানো তো দূরের কথা খোদ মহাপরিচালকের গাড়ি ব্যবহার করতেন নিজে। ওই গাড়ি চালাতেন অধিদপ্তরের আরেক চালক। গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত ওই গাড়িটি কব্জায় ছিল আবদুল মালেকের। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার অভিযান চালিয়ে কোটিপতি এ গাড়ি চালককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

জানা যায়, তিনি স্বাস্থ্যে সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদের গাড়ি চালাতেন। প্রভাবশালী এই গাড়ি চালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ, বদলিসহ নানা অনিয়ম করে শ’ শ’ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাজধানীতে গড়েছেন বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি বাড়ি। খামার গড়েছেন নিজের নামে। ব্যাংকে জমা করেছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই অবাক হয়েছেন তার সম্পদের তথ্য পেয়ে।

মালেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। দেখতে সাদামাটা ভদ্রবেশী মনে হলেও বাস্তবে তিনি ভয়ঙ্কর এক ব্যক্তি। অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা থেকে শুরু করে আছে জাল টাকার ব্যবসা। অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, অর্থ আদায় সবই করেন। গাড়ি চালক পেশার আড়ালে এমন কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড নেই যা তিনি করেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের গাড়িসহ আরো তিনটি প্রকল্পের গাড়ি নিজের কব্জায় রেখেছিলেন। অধিদপ্তরের নিয়োগ-বাণিজ্য থেকে শুরু করে ক্রয়, টেন্ডারবাজি ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন।

শুধু তাই নয়, নিজ এলাকায় মালেক ছিলেন মূর্তিমান এক আতঙ্ক। অবৈধ অস্ত্র ও টাকার গরম দেখিয়ে তিনি ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিলেন। প্রকাশ্য অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে শক্তির মহড়া দিতেন। তার চক্রে ছিল একাধিক লোক। যাদেরকে নেতৃত্ব দিতেন মালেক নিজেই। তাদের হুমকি-ধমকিতে এলাকার লোকজন তটস্থ থাকতো। ভয়ে কারো মুখ খোলার সাহস ছিল না। কেউ মুখ খুললে তাকে নানাভাবে হয়রানি করতেন।

অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে হয়েছেন টাকার কুমির। বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট-সবই আছে তার। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন, অবৈধ ব্যবসা, সম্পদ অর্জনের এসব অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতেন। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রাথমিক তদন্ত করে এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অবশেষে আব্দুল মালেককে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল ভোরে ঢাকার অদূরে তুরাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার জালনোট, ১টি ল্যাপটপ ও ১টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির প্রাডো গাড়ি গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত তিনি ব্যবহার করেছেন। এছাড়া তিনটি প্রকল্পের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার তিনটি গাড়ি তার দখলে ছিল। অধিদপ্তরের ক্রয়, নিয়োগ-বাণিজ্য টেন্ডার-বাণিজ্য ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। একাধিক বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নানা তথ্য আমাদেরকে দিচ্ছেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ