1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৬ অপরাহ্ন

গুরুদাসী মণ্ডলসহ ৬১ নারীর বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩৫৫ বার

বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি মিলেছে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বামী-সন্তান হারানো খুলনার কপিলমুনির গুরুদাসী মাসি নামে পরিচিত গুরুদাসী মণ্ডলসহ ৬১ জন নারীর। এ নিয়ে সরকারের তালিকায় বীরাঙ্গনার সংখ্যা চার’শ জনে উন্নীত হলো।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও বীরাঙ্গনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যদা নিশ্চিত করতে চায়। গত ৯ ডিসেম্বর কপিলমুনি মুক্ত দিবসের অনুষ্ঠানে বীরাঙ্গনা গুরুদাসির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী গুরুদাসীসহ ৬১ জন নারীকে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এখন থেকে তারা ও তাদের পরিবার রাষ্ট্রীয় সকল সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীণ পাকবাহিনীর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন গুরুদাসী ও তার পরিবার। তার বাড়ি উপজেলার দেলুটির বারোআড়িয়া গ্রামে। তার স্বামী গুরু পদ মন্ডল পেশায় একজন দর্জি ছিলেন। গুরুদাসী দেখতে সুন্দরী হওয়ায় পাকদোসররা তার হামলে পড়ে পাশবিক নির্যাতন চালায়। স্বামী এতে বাঁধা দিলে তার চোখের সামনে স্বামী, দু’ছেলে ও শিশুসহ দু’মেয়েকে গুলি করে হত্যা করে।

কথিত আছে, গুরুদাসীর ছোট মেয়ে যখন মায়ের কোলে দুধ খাচ্ছিল তখন পাক দোসররা আকষ্মিক ঐ বাড়িতে হানা দেয়। এক পর্যায়ে তারা মায়ের কোল থেকে শিশুটিকে ছিনিয়ে নিয়ে কাঁদা মাটিতে পুতে মেরে ফেলে। এ সময় সুন্দরী গুরুদাসীকে তার নিজ বাড়িতে আটকে রেখে পাক দোসররা নির্যাতন শুরু করে। এতে গুরুদাসী প্রাণে বেঁচে থাকলেও মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করে নিজেদের কাছে রেখে দেন। দেশ স্বাধীনের পর মানসিক ভারসাম্যহীন গুরুদাসীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনার মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সেখান থেকে চলে আসেন তিনি।

এরপর শুরু হয় তার ভবঘুরে জীবন-যাপন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে এক সময় খুলনা জেলার পাইকগাছার কপিলমুনিতে আসেন, স্থায়ী হন সেখানে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে তিনি গুরুদাসী মাসি হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ভিক্ষাই ছিল তার জীবন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় লাঠি হাতে মানুষকে ভয় দেখিয়ে, হাত পেতে দু/পাঁচ টাকা চেয়েই চলত তার জীবন-জীবিকা। উপজেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এমন কোন মানুষ নেই যে, তাকে চিনতো না। তার মাথা গোজার ঠাঁই বা আশ্রয়ের জন্য কপিলমুনিতে সরকারি জায়গায় তার বসবাসের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করা হয়। সেখানেই মানবেতার জীবনযাপনের একপর্যায়ে ২০০৮ সালের ৮ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ