দীর্ঘ ছয় বছর পর জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে আজ (বুধবার)। রায় কেন্দ্র করে আদালত ও এর আশেপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আদালত এলাকায় পথচারীদের চলাচলে পুলিশের কড়া নজরদারি। আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশেও চলছে পুলিশি তল্লাশি। শিথিল করা হয়েছে সর্ব সাধারণের চলাচল।

দীপন হত্যার রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে থেকেই দীপন হত্যার রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণ ও এর আশেপাশের এলাকায় তারা অবস্থান নিয়েছেন। রায় ঘোষণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আদালত এলাকায় পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি, ডিবি ও সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন।

আদালত প্রাঙ্গণে দায়িত্বে থাকা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন ) নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, অন্যদিনের তুলনায় এ এলাকায় আজ পুলিশের সংখ্যা বেশি। দীপন হত্যার রায়কে কেন্দ্র করে নির্দেশ রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটি মানুষকে তল্লাশি করে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। মামলায় এ পর্যন্ত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

রায় কেন্দ্র করে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে জনসাধারণের চলাচল
মামলার আসামিরা হলেন- মেজর (বরখাস্তকৃত) সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে স্বাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। মামলার প্রথম দুই আসামি এখনও পলাতক।

২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সেদিন বিকেলে তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান। চার্জশিটে ৮ জনকে অভিযুক্ত ও ১১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।

২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।