1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
রবিবার, ২১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
চার দিনের সফরে চীনের পথে প্রধানমন্ত্রী বাকেরগঞ্জে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দিলেন আ’লীগ নেত্রী রাফির উপহার পেয়ে আবেগাপ্লুত তমা ক্ষুধা মেটেনি রিয়াল সভাপতির, নজর ১৬তম শিরোপায় আমরা দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের প্রস্তুতি নিচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ত্রাণ বিতরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মাহিকে দুটি গাড়ি ও ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আজিজ এমপি আনারের বিষয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৬ মাসে ১ দিন কিংবা সাপ্তাহে ১ দিন নয়,২৪ ঘন্টা আমি আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই-মঈনুল হাসান নাহিদ! সিরাজদিখানে ভাইস-চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম বাবুল এর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

বন্ধই থাকছে কিন্ডারগার্টেন

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৪০৮ বার

কল্যাণপুর ল্যাবরেটরি হাইস্কুল। ২০২০ সালে এই কিন্ডারগার্টেনে ৬২৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলো। চলতি বছর সে সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২১২ জনে। স্কুলটির কর্ণধার জাহাঙ্গীর কবির রানা জানান, অনলাইনে যখন ক্লাস নেয়া শুরু করি তখন ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা যেত। এখন কেউই আর ক্লাসে অংশ নেয় না।

জাহাঙ্গীর কবির রানা বলেন, সরকার স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণার পর ২১২ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি আমরা। কেউ জানিয়েছেন ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছেন, কেউ বলছেন সপরিবারে গ্রামে চলে গেছেন। এমনকি শিক্ষকও পাওয়া যাচ্ছে না। আমার বিদ্যালয়ের নিচেই ইংরেজি শিক্ষক চায়ের দোকান দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষকতা পেশায় আর জড়াবেন না।

করোনার কারণে ১৭ মাস বন্ধ শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ দীর্ঘ সময়ে অনেক শিক্ষক মুদি দোকানি হয়েছেন। কেউ জড়িয়েছেন সবজি বেঁচাকেনায়। আবার অনেকে পেশাও বদল করেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ দীর্ঘ সময়ে মাসে অনেক সেক্টর খোলা ও বন্ধ হয়েছে। এই সুযোগে অনেকেই সময় ও সুযোগে ঘুরেও দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু শিক্ষাই একমাত্র জায়গা যেখানে শুধুই তৈরি হয়েছে হতাশা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারাদেশে ৬০ হাজারের বেশি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী ছিলেন ১২ লাখ। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০ লাখ। তবে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে স্কুল কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে কিন্ডারগার্টেনগুলো কার্যত বন্ধই থাকছে।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া বন্ধ থাকার কারণ সম্পর্কে বলেন, ভাঙ্গা বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় এখন এই সেক্টরের কোন কাজেই আসছে না। অবস্থা এমন তৈরি হয়েছে যে আমরা নতুন বছরকে মাথায় রেখেই আবার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সংগ্রহে কাজ করছি।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল মালিক বলেন, আমার স্কুলের ভবনের ভাড়া ছিলো মাসে ৭২ হাজার টাকা। করোনাকালীন সময়ে আমার বৌ এর গয়নাও বিক্রি করেছি। এখন এমন অবস্থা নতুন করে কি করবো আর ভেবেই পাচ্ছিনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর ৯৫ ভাগ ভাড়া বাসায় পরিচালিত হয়। এখানে যারা শিক্ষকতা করতেন তার অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অথবা যারা উচ্চ শিক্ষা শেষ করেও ভাল চাকরি পাননি। এছাড়া এ প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টিউশন ফি দ্বারা পরিচালিত হয়। করোনার কারণে মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এরপর থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়ের উৎসও বন্ধ। এর ফলে ভাড়া মিটিয়ে আবার শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করাই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার কারণে ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ১৫ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক অভাবের কারণে আত্মহত্যা করেছেন একাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। এছাড়াও পেশাবদল করেছেন হাজারো শিক্ষক। অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী প্রায় প্রতিদিনই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলনও করছেন। তবে সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় বাস্তবে এ সেক্টরে তেমন কোন কাজেই আসবে না।

এদিকে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি ঘোষণার পর সব স্কুল-কলেজে তোড়জোড় লেগেছে। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিস্কার, বেঞ্চ, ব্লাকবোর্ড ও শ্রেণিকক্ষ পরিস্কার করতে ঘাম ঝড়াচ্ছেন কর্মীরা।

তবে সরেজমিনে রাজধানীর মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁওসহ একাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের চিত্র এমন দেখা যায়নি। বরং এসব স্কুলগুলো শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রেখে আরও বিপাকে পড়েছে।

দেশের কিন্ডারগার্টেনগুলোর ৬০-৭০ ভাগই নারী শিক্ষক। একটি কিন্ডারগার্টেনে দেখা যায়, সেখানে ৭ জন শিক্ষিকা কর্মরত আছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, ক্লাস বন্ধ থাকলেও আমরা প্রতিদিন বিদ্যালয় খুলে বসে আছি। তবে দীর্ঘ ১৭ মাসেও কোনো বেতন পাননি বলে অভিযোগ করেন তারা।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষার্থীর সংখ্যা অন্তত ৮০ ভাগ কমেছে। নতুন ভর্তি শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। এর থেকে ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী বেতন পরিশোধ করছে। তা দিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান আয়া-দপ্তরি ও বৈদ্যুতিক ভাড়া মেটাচ্ছেন বলে দাবি করেন।

অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেন মালিক বলেন, সরকারি প্রণোদনা না পেলে এটি আর কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

এ বিষয়ে কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আবদুল অদুদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এ কারণে আমরা কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোর দৈন্যতা নিরসনে সরকারের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা চেয়েছি।

‘এ সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে আমাদের প্রস্তাব তোলা হয়েছে ও বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তবে আমরা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি আশ্বাস পাইনি।’

সুত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল।

এ জাতীয় আরো সংবাদ