রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার মামলা যথার্থ, মিয়ানমার এর দায় এড়াতে পারে না বলে মনে করেছেন দ্য হেগ শহরের আদালতের প্রেসিডেন্ট বিচারপতির আবদুলকাভি আহমেদ ইউসুফ।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অপরাধের গুরুতর প্রাথমিক অভিযোগ (প্রাইমা ফেসি) আমলে নেয়ার এখতিয়ার আদালত রয়েছে।
আদালত বলেছেন, গাম্বিয়া স্বনামে এই আবেদন করেছে। এরপর তারা ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থাসহ(ওআইসি) যেকোনো সংস্থা ও দেশের সহযোগিতা চাইতে পারে। তাতে মামলা করার অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে না বলেও তিনি মনে করেন।
আদালত বলেছে, জাতিসংঘ তথ্য অনুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে যেসব বিবরণ উঠে এসেছে তার আলোকে গাম্বিয়া মিয়ানমারকে যে নোট ভারবাল দিয়েছিল তা বিরোধের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
এ বিষয়ে আদালতের এখতিয়ার নেই বলে মিয়ানমার যে দাবি করেছে আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
সনদের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলোর আওতায় ( ধারা ৮ ও ৯) এই মামলা দায়েরের গাম্বিয়ার প্রাইমা ফেসি অধিকার আছে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আদালত মনে করেন, গণহত্যা সনদের ধারা ২ এর আলোকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী একটি বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী (প্রোটেক্টেড) গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচ্য।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ওই মামলার ওপর শুনানি হয়। তাতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি।
আবুবকর তামবাদু শুনানিতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেন। এসময় গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
নৃশংসতার জন্য দায়ী সেনা সদস্যদের বিচার ও সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের উপর ‘আস্থা রাখা যায় না’ মন্তব্য করে মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীবালীন নির্দেশনা চান গাম্বিয়ার প্রধান কৌঁসুলি পল রিখলার।
অন্যদিকে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে সু চি দাবি করেন, রাখাইনের পরিস্থিতি সম্পর্কে গাম্বিয়া যে চিত্র আদালতে উপস্থাপন করেছে তা অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর।
মিয়ানমারের সামরিক বিচার কাঠামোকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত মন্তব্য করে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা বাতিল করার আর্জি জানান তিনি।
দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর আইসিজের ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেল বিষয়টি আদেশের জন্য অপেক্ষমান রাখে।