হালের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমণি নানা কর্মকাণ্ড আলোচনায়। তা সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে সকল মিডিয়াতেই। তাকে গ্রেফতার, রিমান্ড ও জিজ্ঞাসাবাদ এমন আলোচনার ভিড়ে একাত্তর টিভিতে খবর বেরিয়েছে, পরীমণি এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাসায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে।
সেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা হচ্ছেন বোটক্লাবের ঘটনায় নাসির ইউ আহমেদের বিরুদ্ধে পরীমণির দায়ের করা মামলার তদন্তের তত্ত্বাবধায়ক গোলাম সাকলাইন। পরীমণি তাকে বিয়ে করা, গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো ও তার বাসায় অবস্থান নিয়ে সর্বত্র নানা আলোচনা।
গোলাম সাকলাইন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার। রাজারবাগ অফিসার্স কলোনীর মধুমতি ভবনের ৯/সি নম্বরে রয়েছে তার সরকারি ফ্ল্যাট। পরীমণির তার বাসায় দীর্ঘ সময় অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও সরকারের গোয়েন্দা দফতরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
একাত্তর টিভিতে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পরীমণির গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাসায় প্রবেশে করছেন। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, পহেলা আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে পরীমণির সাদা রংয়ের হ্যারিয়ার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫ ৯৬ ৫৩) প্রবেশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি আবাসিক ভবনের সামনে। সেই গাড়ি থেকে লাল রংয়ের টি-শার্ট পরিহিত আলোচিত সেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা নামেন। এরপর সাদা রংয়ের স্লিপিং গাউন পরিহিত অবস্থায় নামেন পরীমণি।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বাসভবনের নিচে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে বাসার চাবি নেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর দুজন লিফটে করে ওই কর্মকর্তার বাসায় যান। এরপর পরীমণির গাড়ি থেকে একটি ট্রলি ব্যাগও ওই কর্মকর্তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত দেড়টায় ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমণির গাড়ি। পুলিশের সন্দেহ হলে পরীমণির চালকের কাছে তার পরিচয় জানতে চান। চালক তখন ওই নিরাপত্তা কর্মিকে বলেন, পরীমণির সাথে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিয়ে হয়েছে বলে তিনি জানেন।
রাত সোয়া দুইটার দিকে পরীমণি তার কুকুর প্রিয় কুটু এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও সাথে নিয়ে যাওয়া ট্রলি ব্যাগসহ বহুতল সেই ভবন থেকে নেমে আসেন। সকালের সাদা পোশাকের পরিবর্তে এ সময় পরীমণির পড়নে ছিল কালো রংয়ের পোশাক আর পুলিশ কর্মকর্তার পড়নে সাদা রংয়ের টি শার্ট।
পরীমণির গাড়িচালক মো. নাজির হোসেন একাত্তর টিভিকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সকাল ৭টার দিকে পরীমণির বাসা থেকে এক সাথে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও পরীমণি হ্যারিয়ার গাড়িতে করে পুলিশ কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে নামিয়ে চলে যান। আবার রাতে ফোন পেয়ে সেই ভবনের সামনে যান।
পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বলেন, কোন মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বাদীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপনে মামলাটি প্রভাবিত হতে পারে। এর সঙ্গে নীতি নৈতিকতার বিষয় সম্পর্কিত। এটা ঠিক পেশাদারিত্বমূলক কাজ নয়। তবে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের আগেই যেন মিডিয়া ট্রায়াল না হয়ে যায় সে বিষয়েও তিনি সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। তিন বলেন, গত কদিন যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তার পেছনে কারা তা খুঁজে বেরা করা জরুরি। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।