আজ ২০ডিসেম্বর, সর্বজন শ্রদ্ধেয় রশিদ মাস্টারের ১৫তম মৃত্যু বার্ষিকী। তিনি ছিলেন সিরাজদিখান তথা মুন্সীগঞ্জের প্রিয় মুখ। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার বিচরণের স্মৃতি আজও মানুষের মুখে মুখে। সিরাজদিখানে তিনি ছিলেন জয় বাংলার ফেরিওয়ালা।
বালুচর ইউনিয়নের খাসমহল বালুচর গ্রামের মুন্সী বাড়িতে রশিদ মাস্টারের জন্ম। তার পিতার নাম ছিল ইন্তাজউদ্দিন মাষ্টার ও মাতার নাম নূরজাহান। একটি শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় তিনি ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। ধর্মান্ধ, অশিক্ষিত ও কুসংস্কারচ্ছন্ন সমাজে তিনি একাধারে ছিলেন সমাজ সংস্করক, অভিনেতা, নাট্যকার, আবৃতিকার ও শিক্ষক। ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন। প্রয়াত নায়ক রাজ্জাক সাহেব ছিলেন তার বন্ধু। অভিনয় জগতের পাশাপাশি তিনি ছিলেন কবিতা আবৃতিতে পারদর্শী। মুন্সীগঞ্জের সেরা আবৃতিকার হিসেবে তার খ্যাতি ছিল। বাংলা একাডেমী তাকে নটরাজ আখ্যা দিয়ে ছিলেন। তার চমৎকার কন্ঠের জাদুতে মানুষ ছিল মুগ্ধ। বক্তা হিসেবে তিনি ছিলেন দক্ষ। অবিকল বঙ্গবন্ধুর কন্ঠ তার কন্ঠে ফুটে উঠতো। তার বক্তব্য শোনার জন্য এলাকার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত। মাইকে কন্ঠ ভেসে আসলেই বুঝা যেত কে বক্তব্য দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা। এলাকার জনগণ তাকে ভালোবেসে শেখ সাহেব বলে ডাকতো। আর তাই জামাল উদ্দিন চৌধুরী এমপি, স্কুলবন্ধু কুরবান আলী, শেখ আনোয়ার, ডি এম মাহফুজ, সিরাজউদ্দিন মাষ্টার, নূর হোসেন মাষ্টার, বাবু যাদব চন্দ্র ঘোষ এবং আরও গুটিকয়েক সমমনাদের নিয়ে তারা সিরাজদিখানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জয় বাংলার সমর্থকদের একত্রিত করেছিলেন। ৭৫ পরবর্তী সময়েও যারা সিরাজদিখানে আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করে রেখেছিল রশিদ মাস্টার তাদের মধ্যে অন্যতম।
বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জনাব মহিউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস, এম সোহরাব হোসেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক এডভোকেট আবুল কাশেম, মোস্তাফিজ স্যার, মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মতিন হাওলাদার, আসলাম খান, সুবীর চক্রবর্তী, আশরাফ চেয়ারম্যান, ইকবাল হোসেন চোকদার, আলেক মুন্সী, প্রফেসর জমির সহ সিরাজদিখান মুন্সীগঞ্জ এর আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা আজও রশিদ মাস্টারকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রশিদ মাষ্টার আমাদের জন্য প্রেরণার। তিনি সিরাজদিখানে রাজনীতির ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি শুধু সিরাজদিখান নয় পুরো মুন্সীগঞ্জের গর্ব। সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামীলীগ সবসময়ই তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।”
পরিবারের পক্ষ থেকে তার আত্মার শান্তির জন্য মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করা হয়। মৃত্যু বার্ষিকীতে আওয়ামীলীগ ও পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা না হলেও রশিদ মাস্টার বেঁচে আছেন মানুষের ভালোবাসার মধ্যদিয়ে।