1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৩ অপরাহ্ন

ধারাবাহিক অপকর্মে পঞ্চাশ বছর, তিন পুরুষেও বদলায়নি মানুষ ঠকানোর পারিবারিক ঐতিহ্য !

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০
  • ৯২৮ বার

বিশ্বনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশ সেবায় ব্যস্ত এবং দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন, তখনই কিছু বাংলাদেশ বিরোধী পরিবারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সমালোচিত হচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ। তেমনিভাবে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলাও চলছে এক পরিবারের দৌরাত্ম।
নলছিটি উপজেলার উল্লেখ্যযোগ্য হল খবির উদ্দিন জমাদ্দার, সে নলছিটি থানার অনুরাগ গ্রামের বাসিন্দা। এই কুখ্যাত দেশ বিরোধী ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি দেশ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। ধর্ষণ, লুটপাট সহ নানান অপকর্মে তার জড়িত থাকার ব্যপারে জনস্বীকৃতি রয়েছে। নলছিটি উপজেলার শান্তিকুন্ডসহ অনেক বাড়িতে জনসম্মুখে লুটপাট করে। তার সীমাহীন অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বাসা ঘেরাও দিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এই ভয়ঙ্কর রাজাকারকে হত্যা করে।
এই খবিরুদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন জামাদ্দার, যে এলাকায় মামলাবাজ বা টাউটার আলাউদ্দিন নামে সুপরিচিত। মানুষকে মামলা দিয়ে বা মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি করে অর্থ রোজগার তার একমাত্র কর্ম। সম্রান্ত ফ্যামিলির অনেককে দুঃসম্পর্কের আত্মীয় বানিয়ে তাদের নাম ব্যবহার করে চালায় তাদের এই কর্মযজ্ঞ। যাদের টাকা পয়সা আছে তাদের সাথে সুকৌশলে মিশে তারপর সুযোগ বুঝে ব্লাকমেইল করে, মামলা করে বা মামলার ভয় দেখিয়ে তার সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়। ২০০১ সালে জামাত-বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাদের এই অপকর্ম আরও গতি পায়। আলাউদ্দিনের প্রতিবেশী ওয়ালিদ খানকে কুপিয়ে জখম করে, টাকা ছিনতাই করে আলাউদ্দিন ও তার ছেলে, যা বরিশালের অনেক সংবাদ পত্রে প্রকাশিত হয়। আলাউদ্দিন নারী কেলেঙ্কারিতে তার বাবার থেকে একটু সুকৌশলী।প্রথমে নারীদের বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ভাল একটা সম্পর্ক গড়ে তোলে পরে ব্লাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং মামলার ভয় দেখিয়ে তা চালিয়ে যাওয়া এই চরিত্রহীন আলাউদ্দিনের নেশা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এলাকাবাসী বলেন, “কয়েকদিন আগে এলাকার কতিপয় লোকদের কাছে এক মহিলার সাথে অনৈতিক কাজের সময় হাতেনাতে ধরা পরে এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করার ব্যপারটি লোকমুখে সমাদৃত রয়েছে।প্রতিবেশী আব্দুল হালিম হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি ছিল এই কুখ্যাত আলাউদ্দিন জমাদ্দার, অনেক টাকা পয়সা খরচ করে সেই মামলা থেকে তার নাম কেটে ফেলতে সক্ষম হয়। যদিও আব্দুল হালিম হত্যাকাণ্ডের মামলার বাদী তার ছেলে পান্না এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আজও মহান আল্লাহর দিকে হাত তুলে আছে এই আলাউদ্দিনের বিচারের জন্য। এলাকায় কমবেশি ২০টি মামলার বাদী বিবাদী এই টাউটার আলাউদ্দিন। আলাউদ্দিনের পেশা কী কেউ জানেনা, আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি তাকে কোন কাজ করতে কিন্তু পরিবারের বিলাসী জীবন যাপন দেখলে মনে হবে বিরাট শিল্পপতি।
তিন পুরুষের সব শেষে রয়েছে টাউটার আলাউদ্দিনের ছেলে এলাকায় চিটার রানা নামে পরিচিত। যদিও চুরি, ছিনতাই, পকেটমার ইত্যাদি ঘটনায় বারবার নাম পাল্টে রানা/ জহির/ ওয়ালিজ্জামান/ অনন্ত/ জেডএম/ অনুরাগী ইত্যাদি নামে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন। ২০০১ সালে পাশের বাড়ির ওয়ালিদকে কুপিয়ে জখম করে টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে ঢাকা এসে অনেকদিন ছিনতাই, পকেটমার এবং চুরি করে পরে নাম পাল্টে ওয়ালিউজ্জামান নামে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে ঢাকা ইপিজেড এ হোপ লুনে সুপার ভাইজার পদে চাকরি নেয়। সেখানে সে তার স্বভাবগত আচরণ করতে থাকে এবং ওই কোম্পানিতে সকলে তার বিরুদ্ধে সেকশন ম্যানেজার ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন পরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চাকরীচ্যুত হয়। এরপর আরও কয়েকটি গার্মেন্টসে বিভিন্ন নামে চাকরি করে আবার অন্য নামে ইইসি বাংলা, নাসা গ্রুপ জহির মহাম্মদ নামে চাকরি নেয় এবং বায়োডাটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকনোমিকসে মাস্টার্স পাশ উল্লেখ করেন, কিন্তু এসএসসি পাস বা তার পরে তার পড়া লেখার ব্যপারে কেউ কিছুই জানেনা। একজন এলাকাবাসী বলেন সেতো ছোট বেলা থেকেই চুরি, ছিনতাই, পকেটমার ইত্যাদি করে করেই এবং বিভিন্ন ছদ্ম নাম ব্যবহার করেই সে চলেছে পড়া লেখা করেনি।কয়েকটি মামলায় কয়েক মাস জেল খেটে ঝালকাঠি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আবার নাম পাল্টে কুমিল্লা চলে যায় এবং ইপিজেড এর এর গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। অল্প কিছুদিন পরেই সেখান থেকে টাকা চুরি করে পালিয়ে আবার নাম পাল্টে তাবলীগে যায়। ওই গার্মেন্টস থেকে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় “ধরিয়ে দিন” শিরোনামে বিজ্ঞপ্তি দেন। রাজাকার খবিরুদ্দিন এর নাতি আর টাউটার মামলাবাজ আলাউদ্দিনের ছেলে চিটার রানা পেয়ে যায় সুযোগ। টাকা আদায় করার জন্য করে দেয় ওই গার্মেন্টস এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা যা এখনও চলমান রয়েছে। তারপরে আবার নাম পাল্টে সাইনেস্ট গ্রুপের গার্মেন্টসে চাকরি নেয় ওই একই মিথ্যা তথ্য দিয়ে অর্থাৎ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকনোমিকসে মাস্টার্স পাশ।চাকরি নিয়েই স্বভাবগত চুরি শুরু করেন সেখানে, অল্প দিনেই বরিশাল শহরে তিনটি জমি, তিনটি আলফাসহ আরও অনেক সম্পত্তি করে। দুই বছরের মাথায় চাকরি ছেড়ে নিজের চেহারা পরিবর্তন করে চুরি করা টাকা সাদা/হালাল করার ফন্দি আটে, সাইনেস্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব আলী আজিম খানের কাছে চুরির জন্য ক্ষমা চান, নিজেকে ধার্মিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত চেষ্টা চালাতে থাকে, কিন্তু এটাও ছিল তার মানুষ ঠকানোর আরেকটি পন্থা। পরে চতুর রানা খুঁজে বের করে ২০০৩ সালে হোপলুনে চুরি, ছিনতাই, পকেটমার ইত্যাদি মামলায় ফেরারি থাকা অবস্থায় যার হাত ধরে চাকরি পেয়েছিলেন আনিসুর রহমান সোহাগ কে।তার সাথে যোগাযোগ শুরু করেন এবং ব্যবসা করার প্রস্তাব দেন। সরল মনে সোহাগ তার সাথে ব্যবসা শুরু করেন। আসলে চিটার রানার আসল উদ্দেশ্য ছিল টাকা সাদা করা এবং সোহাগের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে তার সর্বস্ব নিজের করে নেয়া এবং সমাজে ভাল মানুষদের সাথে উঠবস করার একটা সুযোগ। কয়েক বছর বিভিন্ন ব্যবসা করার পর টোপ বুঝে চিটার রানা সোহাগের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ প্রেরণ করে এবং আদালতে মিথ্যা অভিযোগ করে। রাজাকার রক্তের উত্তরসূরি রানার আসল উদ্দেশ্য সোহাগের কাছে ধরা পরে এবং সোহাগ রানার রাজাকার পরিবার সম্পর্কে, তাদের পারিবারিক ব্লাকমেইলসহ সকল খবর আস্তে আস্তে জানতে পেরে তার সাথে সোহাগ সকল ব্যবসায়িক সম্পর্ক আইনি ভাবে নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সোহাগের হাত ধরেই সে আরও একটি স্কুলের সাথে ব্যবসা করার সুযোগ পায় কিন্তু সেখানে তার নিজের পার্টনার খালিলুর রহমানকে কোন হিসাব না দিয়ে সব নিজে আত্মসাৎ করে। খালিলুর রহমান তাকে বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও কোন হিস্যা তাকে বুঝিয়ে না দেয়ায় বাধ্য হয়ে সে আরেকজনের কাছে তার শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।মূল স্কুলও চুরির দায়ে তাকে বহিষ্কার করেছেন এবং শেয়ার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আলাউদ্দিন এর দুই মেয়ে যাদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসীর মনে রয়েছে অনেক ক্ষোভ। বিয়ের আগে কালিজিরা এবং আসে পাশের এলাকার বিভিন্ন পুরুষদের চব্বিশঘণ্টা আড্ডা ছিল আলাউদ্দিনের বাড়িতে। কেউ কিছু বললে মামলার ভয় দেখাতো তার এই দুই মেয়েও। এক পর্যায় বড় মেয়ের বিয়ে দিতে সক্ষম হলেও ছোট মেয়ে পাশের বাড়ির এক ছেলের হাত ধরে পালালে এলাকাবাসী সস্থি পেয়েছিল। কিন্তু সেই সস্থি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি তাদের, মেয়েরা তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে বেশিরভাগ সময়ই বাড়িতে থাকে এবং একই কর্ম চালাচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এলাকাবাসী এখন ভীত এবং সন্ত্রস্থ।
দেশবিরোধি এই রক্তে রানার সকল সম্পত্তি তল্লাশি করে এর উৎস বের করে উপযুক্ত শাস্তি আজ এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি।

এ জাতীয় আরো সংবাদ