বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী ইউনিয়নের মজনু হাওলাদারের এক সময় দিনমজুরের কাজ করত, বিভিন্ন ইট ভাটায় মাটি ও ইট উঠানো নামানোর পেশায় যুক্ত ছিল। একসময় আন্তজেলা দলের ডাকাত সর্দার ভরপাশা ইউনিয়নের কৃষ্ণকাঠি গ্রামের ডাকাত শাহাদাতের সাথে পরিচয় হয়। নুন আনতে পান্তা ফুরায় এই পরিবারটির, হঠাৎ ইট ভাটার ব্যবসায় নেমে পড়ে নিপা ওয়ান নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠা পরিবারটির বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন অন্যায় অনিয়মের খবর সংবাদকর্মীদের কাছে পৌঁছতে থাকে। সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে মজনুর বাড়িতে গেলে ঘরের পিছনে ১৬টি গরু বাধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে গরু বাকেরগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। মজনু ও তার সহযোগীরা পুলিশ সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় মজনু ও ডাকাত শাহাদাৎ রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু চুরি করে মজনুর বাড়িতে রাখতেন ও মুদিঘাট বসে গরু জবাই করে কম দামে বিক্রি করতেন, একযুগের আগের এই ঘটনা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে যার শিরোনাম ছিল ‘কলসকাঠির মজনু গরু চুরি করে ইট ভাটার মালিক’।
দীর্ঘদিন থেকে গরু চুরির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নেতৃত্বে থাকার অভিযোগের পর চাঁদাবাজির মামলায় বরিশাল জেলা ডিবির হাতে আটক হয়েছেন মজনু। কলসকাঠী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম বাগদিয়া গ্রামের মোকতার হাওলাদারের পুত্র মজনু হাওলাদার।
২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সকালে কলসকাঠীর মুদিঘাট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে মজনুকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মজনু হাওলাদার কলসকাঠী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি।
বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান মোল্লা বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করলে সেই মামলায় মজনু হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়। যাহার মামলা নম্বর -৬। ধারা ১৪৩, ৪৪৮, ৩৮৫, ৩৮৬, ৩২৩, ৫০৬, ১০৯। বিকেল তিনটায় মজনু হাওলাদারকে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
মজনু হাওলাদারের স্ত্রী কলসকাঠী ইউনিয়ন মহিলা লীগের সভাপতি রেখা বেগম । আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মজনু হাওলাদার কলসকাঠী এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। পাণ্ডব ও তুলাতলী নদীর চরের মাটি কেটে কলসকাঠীর বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছেন।
বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা হয়। সেই মামলায় কলসকাঠী এলাকা থেকে বরিশাল জেলা ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে বাকেরগঞ্জ থানা হস্তান্তর করে। আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।