1. successrony@gmail.com : Mehedi Hasan Rony :
  2. arif_rashid@live.com : Arif Rashid : Arif Rashid
  3. meherunnesa3285@gmail.com : Meherun Nesa : Meherun Nesa
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
যুবদল নেতার উপর হামলার ঘটনায় বিএনপির সভাপতিসহ ১৬ জনকে আসামী করে মামলা!  সিরাজদিখানে সরকারী রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ! পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন কর্মস্থলে যোগ না দেয়া পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু: ডিএমপি কমিশনার মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ৮৫ বাংলাদেশি, গেল ১২৩ বিজিপি-সেনা সদস্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নূর বিমানবন্দরসহ আশপাশ ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা আত্মসমর্পণ করে কারাগারে মাহমুদুর রহমান বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান হলেন সৈয়দ দুলাল বড় পরিবর্তন আসছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে

আজানের মহিমা

দিনলিপি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৯৭৩ বার

সর্বোপরি আজান হচ্ছে নামাজের আহ্বান। আর নামাজের গুরুত্ব যে সর্বাধিক, তা বলাই বাহুল্য। ওমর ফারুক (রা.) থেকে বর্ণিত তোমাদের সব বিষয়ের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সালাত। যে তা রক্ষা করেছে অথবা বলেছে যে, এ ব্যাপারে যতœবান হয়েছে, সে তার দ্বীনকে রক্ষা করেছে। আর যে তা ধ্বংস করেছে, সে অন্যান্য ব্যাপারে আরও বিধ্বংসী। (মুয়াত্তা মালেক : ৬; সুনানে কুবরা, বায়হাকি : ২০৯৬)

আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার। আজানের সূচনা ধ্বনি। প্রতিদিন আমরা পাঁচবার এ আজান ধ্বনি শুনে থাকি। আজান ধ্বনিগুলোর অর্থ সবাই না বুঝলেও এ কথা সবাই বোঝে যে, এখন নামাজের সময় হয়ে গেছে। একটু পরই জামাত শুরু হবে। আজানের রয়েছে গূঢ় অর্থ ও মর্ম।
মর্ম ও তাৎপর্য : দুনিয়ায় অনেক কিছুই আছে বড়। রয়েছে বড়ত্বের অহমিকা ও দম্ভ। কিন্তু আল্লাহর বড়ত্ব সবকিছুকে ছাপিয়ে। দুনিয়ায় কোনো কিছুকে বা কাউকে বড়ত্ব তিনিই দান করেন। মহামহিম সেই আল্লাহর মহিমা ও বড়ত্ব দিয়ে সূচনা হয় আজান-ধ্বনির। মানুষ যেন বিনয়াবনত হয় আল্লাহর বড়ত্বের কথা ভেবে। এরপর রয়েছে তাওহিদের সাক্ষ্য। তাওহিদের বিশ্বাস মানুষকে করে দেয় সবচেয়ে দামি, সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী।
এরপর আজানের ধ্বনিতে রয়েছে রিসালাতের সাক্ষ্য। রিসালাতের সাক্ষ্য ছাড়া তাওহিদের সাক্ষ্য অর্থহীন। উভয় সাক্ষ্য মিলে ঈমান পূর্ণ হয়। রিসালাতের সাক্ষ্য আমাদের এ বার্তাই দেয় যে, পৃথিবীর অন্য কোনো পথ ও মতে প্রকৃত সফলতা এবং কামিয়াবি নেই। দৃশ্যত যতই তা যুক্তিযুক্ত ও হৃদয়গ্রাহী হোক না কেন। সুতরাং রাসুলের অনুসরণই আমাদের শিরোধার্য।
উপরন্তু এতে আরও রয়েছে নামাজ ও কল্যাণের দিকে আহ্বান। তাওহিদ ও রেসালাতের পরই নামাজের স্থান। ওমর (রা.) বলেছেন, আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নামাজ। আজানের শব্দ বিন্যাসেও সেই ধারাক্রম রক্ষা করা হয়েছে।
কল্যাণ গ্রহণ মানুষের স্বভাবজাত প্রেরণা। কিন্তু তাওহিদ, রিসালাত ও নামাজের কল্যাণের দিকে আহ্বান এ তাৎপর্যই বহন করে যে, জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের নির্দেশনার মধ্যেই নিহিত। শুধু নিজস্ব মেধা ও বোধ-বুদ্ধি এক্ষেত্রে বিচার্য নয়। তারপর আজানের শব্দে ফের এসেছে আল্লাহর বড়ত্বের উচ্চারণ। মানুষ যেন কখনোই অহংবোধে পতিত না হয়, সেজন্য আল্লাহর বড়ত্বের কথা বারবার। অহমিকা এতই জঘন্য যে, তা মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা প্রদান করে। অবশেষে তাওহিদের বাণী পুনঃউচ্চারণের মধ্য দিয়ে আজান শেষ হয়। মানুষ যেন সর্বদাই তাওহিদের বিশ্বাসে অটল থাকে। তাওহিদের বিশ্বাস নিয়েই যেন তার জীবনের শুভ সমাপ্তি ঘটে।
গুরুত্ব : আজান ইসলামের একটি শিআর বা অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ নিদর্শন। শিআরের গুরুত্ব স্বীকৃত।
ইসলামের শুরুর দিকে মোমিনদের কীভাবে নামাজের জন্য একত্র করা হবে এ বিষয়ে আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবিদের নিয়ে পরামর্শ সভা করেছেন। বিভিন্ন সাহাবি বিভিন্ন রকম মত দিয়েছেন। আল্লাহর রাসুল নানা কারণে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় সেসব মত খ-ন করেছেন। অবশেষে জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে স্বপ্নযোগে এক সাহাবি আজানের শব্দগুলো জানতে পারলেন। নবী (সা.) শুনে তা সমর্থন করলেন। আজানের কালেমাগুলো সম্পূর্ণরূপে ঐশী নির্দেশনাপ্রসূত। আল্লাহর রাসুল কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। আজান কতটা গুরুত্ববহ আজানের শুরুতেই তা স্পষ্ট।
আজানের গুরুত্বের আরেকটা দিক এটাও যে, আজান শুধু শ্রবণের জন্য নয়। প্রত্যেক শ্রোতাকে তার জবাব দিতে হয়। মৌখিক জবাবের পাশাপাশি সবচেয়ে মর্মবহ জবাব হচ্ছে আজান শুনে মসজিদে গমন করা।
সর্বোপরি আজান হচ্ছে নামাজের আহ্বান। আর নামাজের গুরুত্ব যে সর্বাধিক, তা বলাই বাহুল্য। ওমর ফারুক (রা.) থেকে বর্ণিত তোমাদের সব বিষয়ের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সালাত। যে তা রক্ষা করেছে অথবা বলেছে যে, এ ব্যাপারে যন্তবান হয়েছে, সে তার দ্বীনকে রক্ষা করেছে। আর যে তা ধ্বংস করেছে, সে অন্যান্য ব্যাপারে আরও বিধ্বংসী। (মুয়াত্তা মালেক : ৬; সুনানে কুবরা, বায়হাকি : ২০৯৬)।
ফজিলত : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যদি আজান ও প্রথম কাতারের সওয়াবের কথা জানত, তাহলে লটারি করে হলেও তা অর্জনের চেষ্টা করত।’ (বোখারি : ৬১৫, ২৬৮৯; মুসলিম : ৪৩৭)।
মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন সুদীর্ঘ গ্রিবার অধিকারী হবে মুয়াজ্জিনরা।’ (মুসলিম : ৩৮৭)।
অন্য হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন‘যে ব্যক্তি সওয়াবের প্রত্যাশায় সাত বছর আজান দেবে তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লেখা হবে।’ (তিরমিজি : ২০৪)।
নবী (সা.) আরও বলেছেন ‘ইমাম জিম্মাদার, মুয়াজ্জিন আমানতদার। হে আল্লাহ! আপনি ইমামদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আর মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করুন।’ (ইবনে খুযাইমা : ১৫৩১-১৫৩২; মুজামে কাবীর তবারানি : ২০৩)। এছাড়াও আজানের অনেক ফজিলত হাদিসে বিবৃত হয়েছে, যা আজানের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
শিক্ষা : আল্লাহর বড়ত্ব স্বীকার করা, বর্ণনা করা। ঈমান-আকিদার হেফাজত করা। ঈমানের নবায়ন করা। নামাজের দিকে, কল্যাণের পথে দাওয়াত দেওয়া। তাওহিদের বিশ্বাসকে খালিস করা এবং অব্যাহত রাখা।
শেষকথা, পৃথিবীতে বহু ধর্ম আছে। প্রত্যেক ধর্মের রয়েছে ইবাদত-উপাসনার নিজস্ব পদ্ধতি। কিন্তু নামাজের দিকে আহ্বানের এ পদ্ধতি আজান এক অনন্য অনুপম আদর্শ। তাৎপর্যমতি এক শিক্ষা ও ঐশী প্রেরণাজাত এক নিদর্শন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ